Friday, 10 April 2020

✍শ্রী শরৎচন্দ্র দাশের, “জার্নি টু লাসা,ডাইরি অব আ স্পাই” বইটি থেকে কিঞ্চিৎ বঙ্গানুবাদ।

“আজ, ৭ই নভেম্বর, ১৮৮১। দার্জিলিং এর মাথার ওপর জাজ্বল্যমান পূর্ণচন্দ্রের সুষমায় আচ্ছন্ন চরাচর। বুকের ভিতর এক অদ্ভুত দোটানা নিয়ে রওনা দিলাম নিজের জন্মভূমি ছেড়ে। কি হবে? ফিরে আসতে পারব তো স্বদেশে? ইতিউতি ঘুরে বেড়ানো দু চারটে কালো মেঘের পুঞ্জ, অকালবর্ষণের সঙ্কেতবাহী। বারবার চোখ ঘুরে যাচ্ছে, দূরে পূবের পর্বতমালার দিকে। এখানে বর্ষণ মানে, ওখানে তুষারপাত। একদিকে বরফ চাপা পড়ে মরার ভয়, আর অপরদিকে অজানা অচেনা প্রকৃতিকে জয় করার চ্যালেঞ্জ-

নীরবে চলেছি আমি, সকলের নজর এড়িয়ে। উল্টো দিক আসা দু চারজন ভুটিয়া ছাড়া জনশূণ্য পথ। নিস্তব্ধ রাতের বুক চিরে, বহুদূর থেকে ভেসে আসছে কুলিকামিনদের গান, মাদল আর বাঁশির সুর।
নদীর ধারে, লামা উগেন গ্যাৎসো আমার জন্য প্রতীক্ষা করছিলেন। এই সময়, নদী বেশ চওড়া। নদীর বুকের ওপর আলগা ভাবে ফেলে রাখা গোটা চারেক বাঁশই হল সেতু। আমার ভুটিয়া কুলি ফুরচুং বেশ বুদ্ধিমান, ও যদি সাহায্য না করত, এই পিচ্ছিল সেতু এত সহজে পেরোতে পারতাম না।
গোক গ্রামে পৌঁছলাম রাত দেড়টা নাগাদ। অন্য সময় গমগম করে এই গাঁ, বড় হাট বসে, কত দোকানপাট। একটা বৌদ্ধ স্তুপও আছে। দার্জিলিং থেকে ব্যবসায়ীরা আসে ভুট্টা আর ছোট এলাচ কিনতে। আপাততঃ জনমানবশূন্য। কেবল ফাঁকা খাটালে শুয়ে নাক ডাকাচ্ছে এক নেপালী। ঐ খাটালের মেঝেতেই কম্বল বিছিয়ে শুয়ে পড়লাম আমরা। একটু জিরিয়ে নেওয়া আবশ্যক। কাল আবার কাকডাকা ভোরে শুরু হবে আমাদের যাত্রা।
শোয়াই সার, ঘুম আর এলো না। মাটি বড় অসমান এখানে। বড় এবড়োখেবড়ো। পাতলা কম্বল ভেদ করে ফুটতে লাগল শুকনো ঘাস আর আগাছা। গায়ের ওপর দিয়ে হেঁটে চলে বেড়াতে লাগল একপাল পোকামাকড়, সর্বোপরি আচমকা বৃষ্টি এসে একেবারে কাকভেজা করে দিয়ে গেল।

ভোর চারটেতে আবার শুরু পথচলা। পায়েচলা সরু পথ, মেরেকেটে একফুট চওড়া হবে হয়তো। বড় বড় ঘাস আর আগাছায় ঢাকা।সদ্য বৃষ্টিতে পিচ্ছিল।  লণ্ঠন হাতে আমি ফুরচুং কে অনুসরণ করে চললাম। ফুরচুংএর পিঠে ভারী মোট, মোটের সাথে শক্ত করে বাঁধা আমার শটগান। হড়কাতে-হড়কাতে,সামলাতে-সামলাতে আমরা যখন রাম্মামে এসে পৌঁছলাম, সদ্য উদয় হচ্ছেন দিনমণি।

৮ই নভেম্বর-রাম্মাম হল রঙ্গীতের অন্যতম প্রধান উপনদী। সিংলী পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন এই নদী রচনা করেছে বৃটিশ ভারত আর স্বাধীন সিকিমের সীমানা। এই সময় রীতিমত খরস্রোতা এই নদী। পারাপারের জন্য ছোট একটি বাঁশের সেতু ভরসা। ব্রীজের কাছাকাছি উল্টো দিক থেকে আসা একটা বড় দলের প্রায় মুখোমুখি পড়ে যাচ্ছিলাম আমরা। অন্তত জনা কুড়ি তো হবেই। দার্জিলিং বাজারে কমলালেবু বিক্রি করতে যাচ্ছিল।  কোন মতে ওদের দৃষ্টি এড়াই আমরা।

এদিকে প্রচুর শাল গাছ চোখে পড়ে। পাহাড়ের মাথায় ছোটএলাচ আর তুলো গাছে ফসল পেকেছে। বাঁদর আর ভাল্লুকের হাত থেকে ফসল বাঁচানোর জন্য, উঁচু করে বাঁধা বাঁশের মাচায় বসে আছে সদা সতর্ক প্রহরীর দল। শুনলাম এখানে এক ধরণের বীর হনুমানের বড় উৎপাত। সাধারণ বাঁদর বা হনুমানের থেকে আয়তনে বেশ বড়, ফসলের দুশমন। চাষীরা এদের যমের মত ভয় পায়। একলা মহিলা দেখলেই আক্রমণ করে এরা। এদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে করমচা (ডগস্ বেন) এবং অন্যান্য বিষাক্ত গাছের শিকড় ভাত বা অন্য খাবারের সাথে মিশিয়ে ছড়িয়ে রাখে লেপচারা।
রাম্মামের তীরে প্রাতরাশ সেরে, ভারতীয় পোশাক পাল্টে পরে নিলাম তিব্বতী পরিধান। মিতশাং রোডকে ডানদিকে রেখে, শুরু হল চড়াই ভাঙা। এদিকে প্রচুর কৃষ্ণসার হরিণ (অ্যান্টিলোপ) আর জংলী ছাগল দেখতে পাওয়া যায়। গ্রামবাসীরা টুকটাক শিকার করে বটে, তবে বড় দরিদ্র এরা। মেরে কেটে এক ডজন বন্দুক হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে। এদিকে নেপালীই বেশী। কয়েকঘর ব্রাহ্মণ আর ছেত্রীও দেখলাম। মূলতঃ দুধ আর মাখন বিক্রি করাই এদের পেশা। বেশ কয়েক জায়গায় দেখলাম পাহাড়ের ঢালে ধাপী কেটে ধান চাষ করা হয়েছে। লাঙল টানছে বলদে। ভুটিয়ারা ধাপ চাষ করে না।ওরা লাঙলও ব্যবহার করে না। মান্ধাতার আমলের কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে বটে, ফলে ফসল মোটেই ভালো হয় না। লিম্বুরা আবার পর পর তিনবছর চাষ করে, তারপর তিনবছর আবাদ না করে ফেলে রাখে জমি। তারপর আবার আগাছা উপড়ে, শুরু করে চাষবাষ- ।
অনেকটা চড়াই একটানা ভেঙে অবশেষে যেখানে পৌঁছলাম, সেখান থেকে দূরে ধূরমদিয়েং উপত্যকা পটে আঁকা ছবির মত দেখতে পাওয়া যায়। এখানে অনেক গুলি ছোট বৌদ্ধ স্তুপ আছে, পাহাড়িয়ারা এটাকে বলে মনি-দারা। আর ভুটিয়ারা বলে চোটেং-গ্যাং। যেনামেই ডাকা হোক না কেন, অর্থ একই, “পবিত্র স্তুপের পাহাড়”।
স্থানীয় লিম্বুদের থেকে দু বোতল মুরুয়া( বীয়র) আর কিছু আনাজপাতি কেনা হল, এই পবিত্র পাহাড়ে, এক ছোট্ট ঝোরার ধারে আজ রাত্রিবাস করব আমরা।”

✍শ্রী শরৎচন্দ্র দাশের, “জার্নি টু লাসা,ডাইরি অব আ স্পাই” বইটি থেকে কিঞ্চিৎ  বঙ্গানুবাদ।

৯ই নভেম্বর, ১৮৮১- পাহাড় থেকে নেমে, এই মুহূর্তে আমরা যে উপত্যকার উপর দিয়ে চলেছি, তা তুলনামূলকভাবে বেশ ঘনবসতিপূর্ণ। তাপমাত্রাও বেশ বেশী। আমরা হেঁটে চলেছি লিম্বু বসতির ভিতর দিয়ে। বিগত দুইদিনে যে উচ্চাবচ পেরিয়ে এসেছি, সে তুলনায় পথ সুগম। লিম্বুদের বাড়ির সামনে ভেড়া অথবা শুয়োরের খোঁয়াড় থাকে।  ছাগল আর গরুও বাঁধা আছে দেখলাম।
ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সমস্ত লিম্বু বাড়িতে অন্তত তিন থেকে চারটি ঢোল থাকবেই। সমস্ত পরবে, উৎসবে ওরা ঢোল বাজায়। এমনকি গৃহকর্তা যখন কোন কাজে বেরোয়, তার স্ত্রী আর সন্তানরা তার জন্য সম্মিলিত ভাবে ঢোল বাজায়, আবার বউবাচ্ছারা যখন বেরোয়, তখন গৃহকর্তা বসে ঢোল বাজাতে । 

১০ই নভেম্বর, ১৮৮১- আজ সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন চরাচর। আমরা রওনা দিলাম। এক ছোট্ট ঝোরার ধার দিয়ে এঁকে বেঁকে চলেছি আমরা। চতুর্দিকে উঁচু উঁচু পাইন আর রাক্ষুসে ফার্নের জঙ্গল। জঙ্গল আরো ঘন হয়ে উঠল, পাহাড়ের ওপর থেকে মাঝে মাঝেই ঝাঁপিয়ে নামছে খলবলে জলরাশি। বয়ে যাচ্ছে নদীর মত।  নদীর ধারে ধারে বেত ধরণের গাছের ঘন ঝোপ। জঙ্গল এখানে এতটাই ঘন হয়ে উঠেছে যে, সুউচ্চ ফাইন, ওক আর ম্যাগনোলিয়া গাছের মাথা ডিঙিয়ে দেখা যায় না আকাশ।
অনেকগুলো ছোট ঝোরা পেরিয়ে, বেলা একটা নাগাদ আমরা হি লা পাহাড় চূড়ায় উঠলাম। একটা ফাঁকা খাটাল দেখে বিশ্রাম নিতে ভীষণ ইচ্ছে করছিল, কিন্তু বড় জোঁকের উপদ্রব। শয়ে শয়ে জোঁক ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক। রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে, যত তাড়াতাড়ি পারলাম , পাতাতাড়ি গুটোলাম।
উৎরাই পথে নামতে নামতে বেলা চারটের সময় আমরা যেখানে পৌঁছালাম, বেঁটে বেঁটে বাঁশের জঙ্গল। মাঝে মাঝেই বাঁশঝাড়ের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা। ফুরচুং প্রতিটা লাল কাপড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় প্রার্থনা(লা সল) করতে করতে নামছিল। সন্ধ্যে নামছে, জঙ্গলের মধ্যে এক বুড়ো ওক গাছের তলায় মোটামুটি সাফ করে আজকের মত রাত্রিযাপন করার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। চতুর্দিকে বিছুটি জাতীয় বড় বড় লতার জঙ্গল। মহীরুহগুলিকে জড়িয়ে উঠে গেছে। প্রায় একশ ফুট লম্বা লতাও দেখতে পেলাম। পাতি বিছুটি গাছও ছিল। বিছুটি গাছের কচি পাতা দিয়ে দারুণ স্যুপ বানায় কুলিরা । বেশ ভালো খেতে।

১১ই নভেম্বর, ১৮৮১- আজও আকাশের মুখ ভার। কুয়াশা। উপর্যুপরি রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরি। ভুটিয়ারা একে বলে, “মেটগ চারপা” বা পুষ্পবৃষ্টি। আমরা হি গাঁয়ে পৌছলাম। সিংলি পাহাড় থেকে উৎপন্ন কালাই নদী প্রায় কুড়ি মাইল পথ পরিক্রমা করে, তাশিডিং পাহাড়ের পাদদেশে রঙ্গীতের সাথে মিশেছে। কালাই নদীর দুই ধারে, পাহাড়ের ঢালে গড়ে উঠেছে অনেকগুলি ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম। অনেকটা বক্ষপিঞ্জরের মত। কালাই নদী যদি মেরুদণ্ড হয়, গাঁ গুলো পাঁজরা।

হি ও এমনি একটি গ্রাম। এই গাঁয়ে কয়েকঘর ভুটিয়া, লেপচা আর লিম্বুদের বাস। লিম্বুরা এদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সচ্ছল। চাষবাসই এদের মূল জীবিকা। এরা মোষ দিয়ে লাঙল টানায়। লিম্বুদের সম্পর্কে আরও অনেক কথা জানলাম। যেমন, লিম্বুদের সমাজে পাঁচ ধরনের পুরোহিত দেখা যায়। প্রথম শ্রেণীকে বলে “ফেডংবা”, এরা মামুলী পুরুত। পুজো আচ্ছা নিয়েই থাকে। টুকটাক হাত দেখা, ভবিষ্যৎবাণী করা অবধি এদের দৌড়। দ্বিতীয় শ্রেণীকে এরা বলে “বিজুবা”। ওঝা বলতে পারেন। টুকটাক তুকতাক করে। এদের আচারবিধির অন্যতম অঙ্গ হল নাচ। রীতিমত দর্শনীয়, সে নাচ ।
তৃতীয় শ্রেণী হল, “দামী”। এরা অশুভ আত্মা তাড়ায়। যাদুবিদ্যা বা ডাকিনীবিদ্যার সাহায্যে ভূত তাড়ায়। লিম্বুরা মনে করে, দামীর প্রভাবে,ঘাড় থেকে নেমে প্রেতাত্মা বেরিয়ে আসে মানুষের মুখ দিয়ে।
চতুর্থ শ্রেণীকে বলে “বইদাং”। এরা বৈদ্য। সম্ভবতঃ বইদাং নামটাও সংস্কৃত বৈদ্য শব্দের অপভ্রংশ।  পঞ্চম তথা অন্তিম শ্রেণীটি হল, “শ্রীজাংগা”। এরা পুরোহিত শ্রেষ্ঠ। ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন তথা ব্যাখ্যা করার অধিকার শুধু এদেরই আছে। যাঁর থেকে আমি লিম্বুদের সম্পর্কে এত তথ্য জানতে পেরেছিলাম তিনিও শ্রীজাংগা। শুধু তাই নয়, তিনি বাকি পুরোহিতদের বিদ্যাতেও সমপারদর্শী। বলাইবাহুল্য লিম্বুদের মধ্যে তিনি অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি।
কালাই নদীর অববাহিকাকে নীচে ফেলে আমরা আরও ওপরে উঠতে শুরু করলাম। বড় বড় ঘাস আর কাশফুলের মত গাছের ঘন ঝোপে ভর্তি পথ। এদিকে বড় জংলী শুয়োর আর শজারুর উৎপাত। বিশেষতঃ শজারু নিয়ে স্থানীয় অধিবাসীরা রীতিমত আতঙ্কে ভোগে। সামান্য ডালকলাই, মূলো আর রাঙালু চাষ করে এরা।তাতেই চলে সম্বৎসর। তাও বরবাদ করে দেয় শজারু।
দিনের শেষে কালাই নদী থেকে প্রায় ৩০০০ফুট উপরে উঠে এলাম আমরা। বহু নীচে এঁকেবেকে বয়ে যাওয়া কালাইয়আর রাটাং নদী আর তার দুধারে ঢালে গড়ে ওঠা ছোট ছোট গ্রামগুলি যেন পটে আঁকা ছবি। আমাদের ডানদিকে লিংচ্যাম গ্রাম। কমলালেবুর বাগান। মুরুয়ার ক্ষেত। আজ রাতটা এক লিম্বু গৃহে আশ্রয় নেবো আমরা। কুলিরা আসার পথে, পাহাড়ের ফাঁক ফোকর থেকে প্রচুর বুনো পেঁয়াজ (লাগগ) তুলে এনেছে। তরকারি বানাবে।  লাগগের গন্ধ অনেকটা আমাদের রসুনের মত। যদিও ঝাঁঝ অনেক কম। মাংসেও দেয়। মাংসে দিলে অদ্ভূত একটা গন্ধ হয়। বলে, খেলে নাকি কাশি হয়।
১২ই নভেম্বর- যাত্রা শুরু। আজ আবার চড়াই ভাঙা। সরু পায়ে চলা পথ, পথের ধারে ধারে ভুট্টা ক্ষেত। দু চারটে হতদরিদ্র  লিম্বু কুটির। মাঝে মাঝে দু-এক মহিলাকে দেখলাম জঙ্গল থেকে ঝুড়ি করে জংলী এপ্রিকট তুলে আনতে। এই পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে চ্যাংগাচেলিং মঠে যখন পৌঁছালাম বেলা দুটো বাজছে। খাদের ধারে মসে ঢাকা এক চোর্টেন স্তুপ।
দুদণ্ড জিরিয়ে এগিয়ে চললাম আমরা।  এবার পথ ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে।  আকাশ ছোঁয়া ওক আর পাইন গাছের জঙ্গল। নীচে দুর্ভেদ্য বিছুটি বা নেটল জাতীয় লতার ঝোপ। ঝোপ কেটে সরিয়ে আমরা এগোতে থাকলাম। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর পৌঁছানো গেল টেল গাঁয়ে। এখানেই আপাততঃ নিশিযাপন করব আমরা। ছোট্ট গ্রাম টেল। বড়জোর গোটা কুড়ি পরিবার বাস করে। গৃহপালিত পশু বলতে ঘোটকী, মোষ, শুয়োর বেশ কিছু গরু চোখে পড়ল। এখানে লবণের বড় অভাব। ইয়ুংপুং  লবণ ব্যবসায়ীরা অক্টোবরের তুষারপাতের পর আসা বন্ধ করে দেয়।এই সময় তাই কোন অভিযাত্রী দল এ পথে এলেই ভিড় জমায় গ্রামবাসীরা। চ্যাং বা দিশি মদের বিনিময়ে লবণ বেচার জন্য পিড়াপিড়ি করে। আমাদেরও ঘিরে ধরল গ্রামবাসীরা। কিন্তু আমরা নিরুপায়। আমাদের রসদ যে অত্যন্ত সীমিত-। প্রয়োজনের বেশী এককণাও অতিরিক্ত আনতে পারিনি আমরা।

No comments:

Post a Comment