Thursday 27 June 2019

চাটুজ্যেদের গল্প

চাটুজ্যেদের গল্প ২৬/০৬/২০১৯

-হেল্লো বাবা! আই লাভ ইউ।
-(আহ্লাদী সুরে)আই লাভ ইউ। এতে আবার কোন সন্দেহ আছে না কি? একটু আগেই তোমার মা আমি আর দিদি তোমার কথাই বলছিলাম।
-মাকে দাও।
-ও গো, শুনছ। মা। মা জননী। মেয়ে চাইছে। এই তো, এসে গেছে।
-(মা ফোন ধরে) হ্যালো বল। তুত্তুরী সাঁতারে গেল-
-মা, আই লাভ ইউ।
-অ্যাঁ? কেন রে? আজ আবার কি ডে?
#দিল_তো_বাচ্চা_হ্যায়_জী

Monday 24 June 2019

অনির ডাইরি ২৪শে জুন ২০১৯

অনেকদিন বাদে এলেন তিনি। বর্ষীয়ান ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। শ্রম আইন সব গুলে খাওয়া। কোন এককালে নাকি তাঁর প্রবল দাপট ছিল। রীতিমত ধমক চমক চলত। জয়েন করার পর, যখন প্রথমবার ওণারা ডেপুটেশন দিতে এসেছিলেন তৎকালীন সহকর্মীবৃন্দের চাপে রীতিমত পুলিশ রিকুইজিশন করতে হয়েছিল। আমাকে অবশ্য চমকাবার চেষ্টাও করেননি। বেশ কয়েকবার হাল্কাফুল্কা চিল্লাচিল্লি হয়েছিল বটে, তবে সেটা পুরোটাই তাঁর সংগঠনের অনুগামীদের কাছে তাঁর ওজন বাড়ানোর জন্য। এখন তিনি আর সংগঠনের নেতা নন।মামুলী কর্মী মাত্র। তবে অভ্যেসবশতঃ প্রায়ই লেবার দপ্তরের চক্কর কাটেন, আর কি। পড়ন্ত বিকালে ফাঁকা আছি দেখে গল্প করছিলেন, “৩৮বছর ধরে এই পার্টির সাথে জড়িত ম্যাডাম জানেন। ভাইদের বলেছিলাম, বিয়ে থা করব না, তোরা যদি দুবেলা দুমুঠো খেতে দিস, তাহলে পার্টির হোল টাইমার হয়ে যাই।” গল্পে গল্পে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা উঠল, উঠতে বাধ্যও। মে মাসের শেষ বেলাতেও, আসেপাশের অনুদান প্রাপ্ত যে ক্লাবগুলির সামনে জনৈকা নেত্রীর মাল্যশোভিত আবক্ষ চিত্র শোভা পেত, নির্বাচনের উপান্তে চাইল্ডকেয়ার লিভ কাটিয়ে জয়েন করে দেখলাম, “রঙ দে তু মোহে গেরুয়া”।  এত দ্রুত তো গিরগিটিও ভোল পাল্টায় না মাইরি। জাতটার হল কি? উনি মাথা নত করে কিছুক্ষণ বসে থেকে বললেন,“আসলে কি জানেন ম্যাডাম, আপনি যদি কোন বুভুক্ষুর পাতে শুধু একটা রসগোল্লা তুলে দেন, সে খুব খুশি হবে। কিন্তু আপনি তাকে কোন দর্শন তো দিলেন না। নীতিবোধ তথা মূল্যবোধ তো তৈরি করলেন না। পরিণতি? কাল যখনই অন্য কেউ এসে আরো বড় রসগোল্লার প্রলোভন দেখাবে, দেখবেন সে তাকেই ভোট দেবে। দর্শনটা বড় জরুরী । আমরা জাতির পাতে কোন দর্শন তুলে দিতে পারিনি। তৈরি করতে পারিনি কোন মূল্যবোধ। এ এক ঐতিহাসিক অবক্ষয় ম্যাডাম। এ অপ্রতিরোধ্য। ”

উনি চলে যাবার বেশ খানিকক্ষণ পরে ব্যাগপত্র গোচ্ছাচ্ছি, অপর এক নেতার আগমন। ইনি বেশ অল্পবয়সী তথা অত্যন্ত বিনয়ী।কালেক্টরেটে এলেই সাক্ষাৎ করে যান। পরণে দলীয় রঙের পাঞ্জাবি। প্রাথমিক কুশল বিনিময়ের পর বললাম,“বাঃ তুমি এখনও দল বদলাওনি তাহলে। দেখে ভালো লাগছে। ” ভেবেছিলাম অগ্নিগর্ভ বক্তৃতা পাব, বদলে মিইয়ে যাওয়া সুরে শুনলাম,“হ্যাঁ আছি। বছর দুয়েকের আগে কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। আসলে কি জানেন ম্যাডাম, এই রঙের পাঞ্জাবি অনেকগুলো কিনে ফেলেছিলাম। তাই পরে নি। যতদিন পারি। তারপর-”।  দেরী হয়ে যাচ্ছে,লঞ্চ মিস হলেই ট্রেন পালাবে। বেরিয়ে আসতে শুধু বললাম,“বাপ তোকে দেয় কে? তোর মত সমর্থক থাকলে আর বিপক্ষের কি দরকার”। অবশ্যই মনে মনে।

Wednesday 12 June 2019

অনির ডাইরি ১২ই জুন, ২০১৯


তখনও জুন মাস পড়েনি, নির্বাচনের দামামা সদ্য স্তব্ধ হয়েছে। পথ ভোলা পাখি মোর, সদ্য ফিরেছে কুলায়। তুত্তুরীর স্কুলেও পড়ে গেছে ছুটির ঘন্টা। আর আমার চাইল্ডকেয়ার লিভের আবেদনে পড়েছে মঞ্জুরীর শিলমোহর। গরমটাও পড়েছে জব্বর, ঘোর দ্বিপ্রহরে, জানালাদরজায় অর্গল এঁটে, বাতানুকূল যন্ত্র চালিয়ে, “আমার ছুটি,তোমার নয়’ মার্কা একটা  দিবানিদ্রার তোড়জোর করছি, গোপীবল্লভ বাবুর ফোন। “ম্যাডাম,১২ই জুন আসছে। ”
গোপীবল্লভ বাবু, হুগলী জেলায় চাইল্ডলাইনের হর্তাকর্তা। ফিরিঙ্গী ভাষায় যারে কয় ডিস্ট্রিক্ট কোঅর্ডিনেটর।হুগলী জেলায় চাইল্ডলাইন এবং শ্রম দপ্তরের তাল মিলিয়ে কাজ করার বেশ সুখকর অভিজ্ঞতা আছে। আমরা যেখানেই একসাথে হামলা করেছি, কোথাও অসফল হইনি। সে না হয় হল,তাই বলে ছুটির মধ্যে এ কি জ্বালাতন বাপু।
আপনাদের অবগতির জন্য জানিয়ে রাখি,রাষ্ট্রসংঘের নির্দেশানুসারে প্রতিবছর ১২ই জুন দিনটিকে আমরা পালন করি,“বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবস” হিসেবে।বিগত বছরেও আমরা একসাথে ব্যাণ্ডেল স্টেশনে “স্টেশনশিশু” দের নিয়ে পালন করেছিলাম এই দিনটিকে। কিন্ত এ বছর তো আমি ছুটিতে আছিরে বাপ। গোপী বাবু নাছোড়বান্দা,“না ম্যাডাম। আপনার সাথেই এই দিনটা পালন করতে চাই আমরা। ” বড় সাহেব সব শুনে বললেন,“খুব ভালো। করো। আমিও থাকব। তবে লোক দেখানো, পিলে চমকানো কিছু করার থেকে,এমন কিছু কর, যাতে এক রত্তি হলেও প্রকৃত জনকল্যাণ হয়। ”
শুরু হল গোপী বাবুর আর আমার ব্রেন স্টর্মিং। এমনিতে হুগলী ঘোষিত শিশুশ্রমিক মুক্ত জেলা। দু চারজন এদিকে ওদিকে ধরা পড়ে বটে,তবে শ্রমদপ্তর এবং চাইল্ডলাইনের অতি তৎপরতার জন্য তাদের সংখ্যা নগন্য। সমস্যা অন্য জায়গায়। এই জেলা থেকে প্রচুর ছেলে মেয়ে স্কুল ছু্ট হয়ে চলে যায় ভিনরাজ্যে কাজ করতে। ছেলেরা যায় মূলতঃ সুরাট থেকে বম্বে। আর মেয়েরা? মেয়েরা নাচতে যায়। আজ্ঞে হাঁ। বাবা মায়েরা জানে তাদের মেয়েরা নাচতে গেছে,কখনও ১৫দিন তো কখনও ১/২/৩মাসের জন্য। বদলে বাবা মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়- ৫/১০/১৫ হাজার টাকা। “পয়সা ফেক, তামাশা দেখ” এর ‘শিলশিলা’ চলে বেশ কিছুদিন। তারপর একদিন সবার অজান্তে হারিয়ে যায় মেয়েগুলো। কোথায় যে যায়? কেন যে ফিরে আসে না?

গোপীবাবু গল্প শোনাচ্ছিলেন, এমনি দুটি অল্প হারিয়ে যাওয়া ছেলের।  ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র, চেনা ছকে বাঁধা গল্প।  পড়াশোনায় অমনোযোগী,সংসারে অভাব। বাবা-মা দিল পাঠিয়ে ভিনরাজ্যে। যা খেটে দুটো পয়সা তো আনবে। কতদিন আর ঘরের খেয়ে মনের মোষ তাড়াবি?
দুটি ১২-১৩র বাচ্ছা, যারা না জানে হিন্দি,না ইংরেজি।পরিচিত দাদার সাথে গিয়ে হাজির হল হিন্দি বলয়ের এক শহরে। অতঃপর তাদের ঘাড়ে পড়ল,বিশাল আবাসনের অগুনতি ফ্ল্যাটের শৌচাগার সাফাইয়ের দায়িত্ব। মলমূত্র সাফ করতে নারাজ হলে বা কান্নাকাটি করলে জুটত অকথ্য নির্যাতন। সাথে সাথে বন্ধ করে দেওয়া হত খানাপিনা। মর ব্যাটারা। এত গোঁ। পায়খানা সাফ করবি না,তো ভুখা মর। কিভাবে যে চাইল্ডলাইন এদের উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছিল সে এক রোমহর্ষক উপন্যাস।

এই গল্প শুনতে শুনতেই মনে হল,যে সব এলাকা থেকে এই স্কুলছুট বা বাইরে কাজে চলে যাবার ঘটনা বেশী ঘটছে, সেই রকম কোন এলাকার স্কুলের বাচ্ছাদের সাথে দিনটি কাটালে কেমন হয়? বাচ্ছাগুলোও তো জানুক, তাদের অনাগত বিপদ তথা সেই বিপদ হতে পরিত্রানের পন্থা।

স্যারকে বলতেই স্যার এক কথায় রাজি। শুধু স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে একবার বললেন,“তোমরা ঐ সব পদযাত্রা শোভাযাত্রা টাইপ কিছু করবে না তো?দেখো বাবা। বড্ড গরম। বাচ্ছা গুলো না কষ্ট পায়। আর এমন জাঁকজমকী কিছু কোর না, যার সাথে ওরা একাত্ম হতে না পারে। ওদের বোধগম্য করে পেশ করো তোমাদের বক্তব্য।”
বন্ধ ডানলপ কারখানার ভিতরে, বেবাগা ডানা মেলেছে প্রকৃতি। যতদূর চোখ যায়, শুধু সবুজের সমাহার। আর এই সবুজ সাগরের মাঝে সাহাগঞ্জ হাইস্কুল।নির্জন বিশাল জঙ্গুলে এলাকা জুড়ে ছড়ানো ছিটানো একতলা স্কুল।মাঝখানে বিশাল মাঠ। মাঠকে ঘিরে মহীরুহদের জটলা। এককালে সুদিন দেখেছে এই স্কুল। এখন ক্রমেই নিভছে দেউটি। বড়দি অবসর নিয়েছেন। সাকুল্যে দিদিমণি ১৪/১৫জন। আর ছাত্রছাত্রী ৩৫০।হাইস্কুল, বারো ক্লাস অবধি আছে বটে তবে শুধুই কলা বিদ্যা। ছাত্রছাত্রীরা  সকলেই সমাজের পিষে যাওয়া শ্রেণীভুক্ত। তবে প্রাণোচ্ছলতায় পরিপূর্ণ।
 ১০তারিখে সবে খুলেছে স্কুল। ইনচার্জ শ্রীমতী মালা চক্রবর্তীর কাছে প্রস্তাব রাখা মাত্রই উনি রাজি।

এরপর আর কি?আমাদের এনসিএলপির প্রজেক্ট ম্যানেজার ঝুমা রাতারাতি বানিয়ে ফেলল ব্যানারের ডিজাইন। গোপীবাবু আর আমি মিলে ঠিক করলাম,শুধু গপ্প বলে বাচ্ছাদের টিকিয়ে রাখা যাবে না। হয়ে যাক পোস্টার প্রতিযোগীতা। বিষয়-শিশুশ্রম তথা শিশুশ্রমিক। ওদের চোখ দিয়েও দেখা যাক। ওরা কি বুঝল,“শিশুদের কাজ না করার দিন”এর মানে?
বিজেতাদের জন্য কেনা হল পুরষ্কার। বাকিদের জন্য সান্ত্বনা টফি(ট্রফি নয়)। নীরবে অনুসরণ করছিল তুত্তুরী, গতকাল রাত থেকে তীব্র বায়না,“আমিও যাব মা।” স্যারকে ভয়ে ভয়ে বললাম,“নিয়ে যাব স্যার?” সম্মতি এল দশ সেকেণ্ডে। বিকট ভয়ে ভয়ে গেল তুত্তুরী,যদি ঢুকতে না দেয় দিদিমণিরা।
সাহাগঞ্জ হাইস্কুলের মাঝারি হলঘরে, মাটিতে ত্রিপল পেতে, কাঁচা কাঠের বেঞ্চে বসে হল অঙ্কন থুড়ি পোস্টার প্রতিযোগিতা। কি ভালো আঁকল ছেলেমেয়ে গুলো। আর কি ভালো গল্প শোনালেন গোপীবাবু। বাচ্ছারা তো বাচ্ছারা আমি শুদ্ধ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম। গল্প হলেও সত্যি। অবশেষে পুরষ্কার বিতরণ।
বিজয়ীদের তালিকা থেকে তুত্তুরী যথারীতি বাদ। শুকনো, ঘেমো অথচ হ্যাংলা মুখটা দেখে  কিংশুক মামা সদ্য প্রাপ্ত পুষ্পস্তবকটাই তুলে দিল তুত্তুরীর হাতে। আর সুখেন মামা আর রমেশ মামা মিলে দিলো রঙ পেন্সিল আর টফি। শেষে,বাইরের বিশাল মাঠে গ্রুপ ফটো তোলার সময়, মাও সে তুংয়ের সেই কথাটা বারবার মনে হচ্ছিল,“জগৎটা তোমাদের। জগৎটা আমাদেরও। কিন্তু তোমরা হলে,সকাল বেলা আটটা নটার সূর্য। ” ভালো থাকুক এই তরুণ তপনেরা,আগত সমাসন্ন আঁধার কাটাতে এদেরই আজ বড় দরকার।




Friday 7 June 2019

অনির ডাইরি ৭ই জুন ২০১৯


সিরিয়াসলি? খুব দুঃখ হয়েছে? বিদ্যা বালন বলেছেন বলে? আর আমরা যে এত বছর ধরে সরব নীরবে বলে আসছি,“তোর বাপের খেয়ে মোটা নাকি? অথবা আমি কালো তাতে তোর পিতৃদেবের কগাছা উৎপাটিত হল?” সেটা বুঝি কানে ঢোকেনি? আচ্ছা যাঁরা যাঁরা,বিদ্যার ভিডিওটি শেয়ার পূর্বক,  জ্ঞানগর্ভ পোস্ট দিলেন বা লিখলেন, ছিঃ এরকম করে বলা উচিৎ নয়, কবে যে আমরা শিখব, রোগাকে রোগা,মোটাকে মোটা, কালোকে কালো বলতে নেই, তাঁরা আজ অবধি কতজনকে ফোকটে জ্ঞান দিয়েছেন,একটু বলবেন? “আর খাস না। ভাত কম খা। আলু খাস না। মিষ্টির দিকে তাকাস না। তুই চকোলেটের কথা ভাবিস কি করে? সকালে খালি পেটে গরম জল আর লেবু খা। দেখছিস ও কেমন রোগা হয়ে গেছে, খালিপেটে কপালভাতি কর। তোর বাড়ির কাছে জিম নেই?এবার ভুঁড়িটা একটু কমা” শালা আমার ভুঁড়ি,তাকে কমাব কি বাড়াব সেটা আমি ঠিক করব। তুই কে রে বাপ? আমি তো কখনও ঘুরিয়ে ফিরিয়েও তোর গ্রে ম্যাটার নিয়ে আলোচনা করি না।

দাঁড়ান দাঁড়ান আরো আছে, কতজনকে বলেছেন, ওজন কমাও/বাড়াও না হলে বিয়ে হবে না/সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে? কতজনকে নিমাই-শ্রীচৈতন্য এইসব বলে তার সামনে/পিছনে ফস্টিনস্টি করেছেন? কতজনের চোখ/নাক/চিবুক নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন? কতজনকে বলেছেন তোর যা উচ্চতা, তোর বাচ্ছারা ফুটপাতে বসে পা দোলাবে? কতজনকে বলেছেন, তোর যা চেহারা তোকে  ঐসব জামাকাপড় মানাবে না। তোর যা গায়ের রঙ, লাল/কমলাটা না পরাই ভালো। অথবা সর্ব দোষ হরে গোরাঃ। গায়ের রঙ ফর্সা হলেই বাকি সব খুঁত ঢেকে যায়? কতগুণ মশাই/মহাশয়া আপনার, একই সাথে ডাক্তার এবং পার্সোনাল স্টাইলিস্ট।  ম্যা গো! সাধে আপনার মস্তিষ্কস্থিত পদার্থটি  ভয়ানক দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাও আমরা আপনার ঐ ম্যাটারটি নিয়ে আলোচনা করি না। একবার ভাবুন খালি কি অসীম সহনশক্তি আমাদের,মাইরি!

আজন্ম এই ধরণের “বুলি”দের নিয়ে ঘর করি আমরা, হয়তো আমৃত্যুও। কে বা কারা থাকে না, এদের মধ্যে? আত্মীয়-পরিজন- বন্ধু-প্রেমিক(ইকা)- সহকর্মী। বাপস্ কত শুভাকাঙ্খী আমাদের মাইরি। সকলের সামনে অথবা নিভৃতে আপনার বলা তুচ্ছতম ঠাট্টাটাও যে কতখানি হৃদয় বিদারক হতে পারে, কোন ধারণা নেই বোধহয় আপনার, থাকবেই বা কি করে, যাদের নিয়ে এসব ঠাট্টাতামাশা করেন,তারা মুখবুজে সয়ে যায় যে। হয়তো নকল দেঁতো হাসির আড়ালে লুকিয়ে ফেলে উদ্গত অশ্রু। কানে অহরহ বাজতে থাকে আপনার সবজান্তা তামাশা/জ্ঞান।
আত্মবিশ্বাসের প্রতিনিয়ত গণধর্ষণ সইতে সইতে বেড়ে উঠি আমরা। ক্রমশঃ মিশে যাই মাটিতে। কোন বিস্মৃত অতীতে এই অধমেরও মনে হত,পৃথিবীর কুৎসিততমা মেয়েটি হেঁটে চলেছে, হাওড়া সড়ক-গলি ঘুঁজি দিয়ে। যত ফাঁকা রাস্তা,ততো মঙ্গল। শুভাকাঙ্ক্ষীদের মুখদর্শনের বিড়ম্বনা থেকে তো মুক্তি। ঝুঁকতে ঝুঁকতে মাটিতে প্রথিত হয়ে টের পেলাম,“They buried us, but they didn't know we were seeds.” অতঃপর বুঝলাম দুইহাতের দুই মধ্যমার অস্তিত্বের তাৎপর্য। আর আজ যখন এই ডাইরি লিখছি, আমার উল্টোদিকের আয়নায় যে বসে বসে মোবাইলে কি যেন করছে, আমার চোখে সে সত্যিই অনিন্দিতা। সেসব দিন আজ শুধু নিছক কৌতুক জাগিয়ে যায়। তাই বলে কি ভাবছেন, “চোখে আঙুল দাদা/দিদি” আমার কম আছে? প্রতিনিয়ত কত যে শুভাকাঙ্ক্ষী, ফোকটে কত যে জ্ঞান দেবার জন্য ছটফট করে মরে! আর আমি কি বলি? শুননই না।চাইলে শিখেও রাখতে পারেন, কাজে আসবে। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ হলে মনে মনে, আর বাকিদের বলি সোচ্চারে,“আপলোগ না যা’কে টাট্টি খালো”।


https://m.youtube.com/watch?v=rOunvdHHNYU

Thursday 6 June 2019

অনির ডাইরি ৬ই জুন,২০১৯


জনৈক গ্রুপে একটি পোস্ট দেবার ছিল, বিষয়টা বেশ জটিল এবং বেশ অনধিগত শিরোনাম ছিল #বেড়ানোর_কেনাকাটা_কান্নাকাটি।

বেড়াতে গিয়ে কেনাকাটা মাইরি বলছি তেমন করি না। যেখানেই যাই, সেখানকার সৌন্দর্যে এমন বিমোহিত হয়ে যাই, যে “স-সে-মি-রা” মত একটা কথাই মুখ দিয়ে বের হয়, “উফ্ কি অপরূপ সুন্দর। ” তাছাড়া কিছু কিনতে গেলেই আমার বর,(শ্রীমান শৌভিক) শর্তারোপন করে, ক্রীত দ্রব্যাদি আমাকেই স্বস্কন্ধে বহন করে আনতে হবে। আমি প্লাস কেনাকাটা যদি অতিরিক্ত শুল্ক প্রদান করতে হয়,এই ভয়েও তেমন কিছু কিনি না।

তবে বেড়াতে যাবার সঙ্গে কেনাকাটার এক অবিচ্ছেদ্য যোগাযোগ আছে এটা মানি। সেই করে নব্বইয়ের শুরুতে মুসৌরি থেকে বিস্তর দর করে ২০টাকা দিয়ে মায়ের কিনে দেওয়া লাল পুলওভার, আজও এতটুকু টসকায়নি। আজকাল আমার মেয়ে পরে। তারও আগে,সেই কবে, আসাম থেকে বড় মেসোমশাইয়ের এনে দেওয়া ছালের কাপড়(ব্যাপারটা কি আমিও জানি না) পরে আজও মা সন্ধ্যা দেয়।২০০৭এ প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাতাসিয়া লুপ থেকে ৮০টাকা দিয়ে বাবার কিনে দেওয়া উইণ্ডচিটার,এখনও বর্ষা কালে স্টাইল স্টেটমেন্ট। হায়দ্রাবাদ থেকে বিভিন্ন সময় মাসিদের কিনে আনা কয়েক ডজন মুক্তার সেট,আজও আমার সাজার টেবিল সাজিয়ে রেখেছে। কুর্গ থেকে বছর দুয়েক আগে কিনে আনা খাঁটি চন্দনবাটার মাখন মাখন ফেসপ্যাক আজও গোল্ড ফেসিয়ালকে আড়াই গোল দেয়। তেমনি মন মাতানো সুগন্ধ।  চন্দনের পারফিউমও কিনতে যাচ্ছিলাম। সাথে স্থানীয় এলাচ আর গ্রীন কফি। কিনেও ফেলতাম,যদি না সেলসম্যানটা না ঠেট দক্ষিণ ভারতীয় অ্যাকসেন্টে অবোধগম্য ইংরেজিতে বলত,“শুধু গ্রীন কফি খেলে কিন্তু রোগা হবেন না, সাথে পরিমিত আহার আর শরীরচর্চাও প্রয়োজন।” তাও আবার আমার বরের সামনে! এ হেন অপদস্ত করার কোন মানে হয়?  মূর্তিমান আপদ একটা। যদি কুর্গে যান, বলে দিলাম ভুলেও কর্ণাটক এম্পোরিয়ামের ঐ দোকানটিতে ঢুকবেন না কিন্তু।

শেষ করব লোকাল ট্রেনে আনারদানা বিক্রি করা এই দাদুর গল্প দিয়ে, অফিস যাবার পথে ট্রেনে আমার অন্যতম দোসর, হুগলী জেলার তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের এক আধিকারিক।নামটা উহ্যই থাক।  ট্রেনেই আমাদের আলাপ এবং ট্রেনেই জমে ওঠা বন্ধুত্ব। অফিস টাইমে দৌড়তে দৌড়তে বিধাননগর স্টেশনে পৌঁছে যেদিন সখীর দেখা না পাই, সেদিন সক্কাল থেকেই মেজাজটা যায় তেঁতো হয়ে। মুখে অবশ্য স্বীকার করি না, বরং প্রায়ই বলি, “এই শেষ আর তোমার সঙ্গে যাচ্ছি না।“ আসলে আমরা এককাট্টা হলেই কত কি যে কিনি তার ইয়ত্তা নেই। ঝুটো গয়নার প্রায় মিউজিয়াম হয়ে গেছে আমাদের বাড়িটা। বেশ কিছুদিন আগের কথা,আমরা একসাথে যাচ্ছি, হঠাৎ তিনটে বল লাগানো লাঠি হাতে বৃদ্ধের আগমন। আগেও দেখেছি,  চলন্ত ট্রেনে উনি আমলকি, আনারদানা ইত্যাদি ফিরি করেন। পোশাকআশাক বলতে ধোপদুরস্ত সাদা হাফ শার্ট আর প্যান্ট। প্রবল শীতই হোক বা প্রখর গরম অথবা ঘোর বর্ষাকাল, দাদুর পরণে একই পোশাক। বেচেন কি জানি না,তবে, জনে জনে ফ্রি স্যাম্পল বিলি করে বেড়ান।  আমাদেরও দিতে এলেন, আমরা দুজনে হাত নেড়ে জানালাম, চাই না। ও বাবা, বৃদ্ধের কি গোঁসা, সখী ধারে বসেছিল, তাকে লাঠি দেখিয়ে বললেন, “কি রে মা? খাবি না? খা বলছি! নাহলে এই লাঠি দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেব!“ হাসব না কাঁদব বুঝতে পারলাম না। থুড়থুড়ে বুড়ো, লাঠি ঠুকঠুক করে হাঁটে, বলে কি না মারবে। এবার আমাকে বললেন, “তুই ও খারে মা। এই দাদুভাই নে ধর। খা বলছি।“ দাদুভাই বলতে আমার পাশে বসা একজন দিদিমণি।মুখে মুখ টিপে হেসে আমরা তিনজনই বাধ্য ছাত্রীর মত হাত বাড়িয়ে দিলাম। বুড়ো  বিগলিত হয়ে সখীর মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “রাগ করলি মা? বুড়ো ছেলেটা তোকে লাঠি দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেবে বলেছে, তাই কি রেগে গেলি মা?” মুখে কাঁচা আম দেওয়া আনারদানা চুষতে ব্যস্ত সখীর হয়ে জবাব দিলাম,” রাগ করবে কি? ও তো পুলকিত হয়ে গেছে। কি তাই না?” প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণে মাথা বেঁকিয়ে সম্মতি জানালো সখী।  সেই শুরু,তারপর থেকে বুড়োর ভালোবাসার অত্যাচারে আমি জর্জরিত। এবং বর্তমানে একটি পাক্কা গুলিখোর। সবসময় ব্যাগে মিষ্টি গুলি নিয়ে ঘুরি।বিশেষতঃ তুত্তুরীকে পড়াতে বসালে তো গুলির ডাব্বাটা নিয়েই বসি, দাদু ঠিকই বলে,“গ্যাস থেকে গোঁসা যাই হোক দুটো মুখে ফেলে দিবি।” দেখা হলে আপনাদেরও দেবো খন-

ইয়ে আপনাদের জন্য দাদুর একখান ছবি তুলে এনেছি, কেমন পোজ দিয়েছেন দেখুন না। তুলতে হয়েছে অনেকগুলো,তারপর দেখাতে হয়েছে, শেষ পর্যন্ত এটাই বুড়োর পছন্দ-

Sunday 2 June 2019

অনির ডাইরি ২রা জুন, ২০১৯

এরকম দম্পতি বাস্তবিকই দুর্লভ, যাদের সংস্পর্শে  আমরা দুজনেই স্বচ্ছন্দ। যেখানে কোন সাবটিম থাকবে না। যেখানে পুরুষ সদস্যরা শুধুমাত্র রাজনীতি নিয়ে গুঁতোগুঁতি করবে না।যেখানে আমার বর স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্য নিয়ে বড়দা মার্কা জ্ঞান বিতরণ করতে পারবে এবং অন্যপক্ষ মোটেই হাই তুলবে না বা কান বা নাক খুঁটবে না।  যেখানে উপস্থিত অন্য মহিলা সদস্যটি আমাকে ওজন কমানো বা মাতৃত্ব বা গুছিয়ে সংসার করা বা সন্তানের মুখ চেয়ে চাকরী ছাড়া নিয়ে সুচিন্তিত অথচ অযাচিত মতামত দেবে না। শাশুড়ী পুরাণ খুলে বসবে না বা সন্তানের বিদ্যার্জন বা কোষ্ঠকাঠিন্য বা ইয়ের বর্ণ বিশ্লেষণ করতে বসবে না।  কারণ এই নিয়ে গপ্পের হাঁড়ির ঢাকা খুললেই, কেন জানি না, আমার পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। উপরিউক্ত সমস্ত শর্তাবলী মেনে যাদের পাওয়া যায়, তারা সকলেই এত ভয়ানক ব্যস্ত এবং সর্বোপরি পে কমিশনের দৌলতে মাসের সাত তারিখ কাটলেই এমন হতদরিদ্র যে দেখা করবই বলে গোঁ ধরে বসে থাকলেও আর দেখা হয়ে ওঠে না। হয় শুধু পরিকল্পনা। তারিখ পে তারিখ, মি লর্ড। তারিখ পে তারিখ।
এষা আর অর্জুন হচ্ছে সেই দুর্লভতম দম্পতি তথা বন্ধুদের মধ্যে অন্যতম। সবথেকে বড় কথা বয়স যেহেতু কম, তাই দেখা করার উদ্যোগও এষাই বেশী নয়। পর্যায়ক্রমে একবার শৌভিককে আর একবার আমায়,“ও দাদা/ও দিদি” করতে থাকে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর শৌভিকের নিদ্রাভঙ্গ হয়,“এষাটা খুব জ্বালাচ্ছে। দেখা করতেই হবে মনে হচ্ছে। ”আমি আর তুত্তুরী একপাক নেচেনি আনন্দে। কোথায় দেখা করবে, এই নিয়ে দড়ি টানাটানি শেষে শৌভিক শেষমেশ ঘোষণা করে,“এক কাজ কর,তোরা আমাদের বাড়িতেই চলে যায়।” অতঃপর বাতানুকূল আবহাওয়ায় গড়াগড়ি খেয়ে গপ্প। তুত্তুরীর বাঁধা জায়গা এষা পিসির কোল। আমাদের গপ্পের গতি বারবার বাধা পায় পিসি ভাইঝির গুপ্ত গল্পের ফিসফিসানিতে। অনেক রাতে যখন এষা অর্জুন বিদায় নিতে চায়, তুত্তুরী তখন গড়াগড়ি দিয়ে কান্না জোড়ে। “আজ রাতে আমি এষা পিসির বাড়ি গিয়ে এষা পিসির সাথে ঘুমাব।” চেনা ছক।

এবার অবিশ্যি, একটু অন্য পথে, কারণ বিগত নির্বাচন প্রায় নিকড়ে নিয়েছে শৌভিক আর এষার প্রাণশক্তি। রিফিল করার জন্য নিছক পানভোজন আর আড্ডাটা অনেকটা স্যালাইনের মত। কোথায় হবে, এই নিয়ে ব্রেন স্টর্মিং অপ্রয়োজনীয়, এষার আদুরে আব্দার মার্কোপোলো। শৌভিকের প্রিয় রেস্তরাঁ। আর মাসেরও সবে ইয়ে এক তারিখ আর কি-
তুত্তুরী যদিও এবার যেতে চাইল না। “নাঃ তোমরাই যাও। তোমরা খালি ইলেকশন- ডিএম-এডিএম করবে। ” আসল কারণটা যদিও বাইশ গজে নিউজিল্যাণ্ড-শ্রীলঙ্কা আর আফগানিস্তান- অস্ট্রেলিয়ার দ্বৈরথ।
শৌভিকের হুকুমনামা ছিল সাড়ে ছটার মধ্যে ঢোকার। এষা-অর্জুন বা আমি কেউই তেমন পাত্তা দিইনি যদিও। সাতটা নাগাদ যখন ঢুকলাম, দিব্যি ফাঁকা গড়ের মাঠ। ওয়েটারদের মধ্যেও ব্যাপক ল্যাদ। সাতটা থেকে ঘড়ির কাঁটা কখন যে নটার ঘরে পৌঁছল, কেউই খেয়াল করিনি বোধহয়।

অদূরাতীতে, মার্কোপোলোতেই জীবনের প্রথম ককটেলটির আস্বাদ গ্রহণ করেছিলাম, নাম ছিল,“ইলেকট্রিক জ্যাম। ” ভডকা-টেকিলা আর ব্লু কিউরাশাও এর অনুপম সংমিশ্রন।অর্ধেকটা নীল আর বাকি অর্ধেকটা ঘোলাটে সাদা।  বাইরে থেকে মনে হয়েছিল এক চুমুক সমুদ্র বুঝি ভরে দেওয়া হয়েছে টলটলে কাঁচের গ্লাসে। তলায় হয়তো পড়ে আছে একখণ্ড রোদ পোয়ানো সোনালী সৈকত। হোমিওপ্যাথি ওষুদ ব্যতিরেকে জীবনে প্রথম অ্যালকোহলের আস্বাদ গ্রহণের দৌলতেই হয়তো, অদ্ভুত ফুরফুরে অনুভূতিতে ভরে উঠেছিল মন আর মাথা।
বহুবছর বাদে আবার ইলেকট্রিক জ্যাম চেখে দেখলাম। এবার বড় বেশী মিষ্টি লাগল খেতে। পরেরটা আর মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছিল না, ওরাই সাজেস্ট করল,“ব্ল্যাক রাশিয়ান” খেয়ে দেখুন না। একে রাশিয়ান তায় কালো? শুনেই কেমন যেন “মিস জেলী, জ্যামে আটকে গেছে” মার্কা মারকাটারি অনুভূতি হল। মার্টিনি গ্লাসের মত সুন্দর গ্লাসে কৃষ্ণকায় যে বস্তুটি দিল তা মূলতঃ কালো কফি আর ভডকার সংমিশ্রণ,খেতে খেতে বারবার অর্জুন আর আমি একই কথা বলছিলাম,“কেমন যেন। কাশির ওষুধ মার্কা খেতে। ” আর হ্যাঁ, বেশ মিষ্টি বাপু।

খাবার নিয়ে অবশ্য বলার মত কোন বিশেষণই খুঁজে পাচ্ছি না।মার্কোপোলো অনবদ্য। গোটা ঐ চত্বরে, এই অধমের চেখে বেড়ানো, সীমিত সংখ্যক রেস্তোরাঁর মধ্যে নিঃসন্দেহে সেরা।ওদের চেলো কাবাব, অনায়াসে পিটার ক্যাটের চেলোকে সাড়ে বত্রিশ খানা গোল দিতে পারে। পিটার ক্যাটের চেলো আলো করে থাকে যে দুটি শাম্মি কাবাব,বিশ্বাস করুন, তাই দিয়ে তুত্তুরীকে ঠ্যাঙানো যায়। কেমন শক্ত, তেমনি শুকনো। মার্কোপোলোতে ঐটি মুখে দিলেই ফক্কা- অনেকটা বুড়ির মাথার পাকা চুলের মত। একই অনুভূতি তথা অভিজ্ঞতা এবার ওদের গলৌটি কাবাবকে নিয়ে হল।   যখন অর্ডার করা হল, তখনও অওধ- ১৫৯০এ চেখে দেখা গলৌটি কাবাবেরর স্মৃতি মনে করে বেশ বিরক্ত হয়েছিলাম বটে, কিন্তু মুখে দিতেই কেমন যেন গলে গেলাম,হারিয়ে গেলাম কাবাব এবং আমি দুজনেই। ওজনের ঘোড়া এমনিতেই অত্যন্ত অভদ্র বেবাগা, জানি এই সুযোগে দৌড়ে গেল অনেকটাই, তবে কবে যেন তাকে শেষ পাত্তা দিয়েছিলাম? বোধহয় কোনদিনই না। প্রিয়জনেদের সংস্পর্শে এমন একখান নির্ভেজাল আনন্দময় সন্ধ্যার পাশে ওজন যন্ত্র কেয়া চিজ হ্যায়? আর বুধ বা শুক্র গ্রহে যদি যাই, তাহলে তো এই অধমও রীতিমত তন্বী বলেই বিবেচিত হব, নাকি।