সেই বউটার কথা খুব মনে পড়ছে। নাঃ আমার সাথে প্রত্যক্ষ আলাপ নেই। আমি তার গল্প শুনেছি। শিয়ালদা মেন লাইনের কোন প্রত্যন্ত স্টেশনে বাড়ি মেয়েটার। ঘরে অসুস্থ স্বামী। ছোট বাচ্ছা। স্বামী হঠাৎ শয্যাশায়ী হয়ে পড়ায়, অকস্মাৎ পেটের ধান্ধায় বেরিয়ে পড়েছিল মেয়েটা। রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে। সকাল সকাল রান্না সেরে,বর-বাচ্ছার খাবার গুছিয়ে বেরিয়ে পড়ে। গন্তব্য- বিধাননগর রোড স্টেশন। স্টেশনের আসেপাশেই, পুরুষ-নারী নির্বিশেষে জমায়েত হয়, এই রকম কাজের ধান্ধায় ঘোরা অদক্ষ শ্রমিকের দল। ঘোরে কন্ট্রাক্টরের লোকজন। পুরুষদের কাজও বেশী আর রোজও। মেয়েদের কাজ পেতে গেলে চুকাতে হয় অন্য মূল্য। অভ্যাস হয়ে গেছে মেয়েটার। ওর ভাষায়, “কাজ পেতে গেলে কাপড় খুলতে হবে। ” কোনদিন দেরী হয়ে যায়। ট্রেন মিস করে। দৌড়ে এসে দেখে, ময়দান শুনশান। কাজে চলে গেছে সব। প্রথম প্রথম ভেঙে পড়ত মেয়েটা। টাকা না নিয়ে বাড়ি গেলে খাবে কি? ঘরে ফেরার ট্রেন থেকে নেমেই বাজার করতে দৌড়য় মেয়েটা। দরদস্তুর করে বাজার করে নিয়ে যায়,তবে তো হাঁড়ি চড়ে। এখন আর ভাঙে না। জানে ফাঁকা ময়দানে ঘোরে আড়কাঠি। কখনও কখনও খরিদ্দার সোজাসুজি কথা বলে নিয়ে যায়। প্রশ্নকর্তা জিজ্ঞাসা করেছিল, এই ভাবে প্রত্যক্ষ দেহব্যবসা করতে সঙ্কোচ বা লজ্জা বোধহয় কি না। মেয়েটা একই কথা বলেছিল, হিসাব খুব সোজা, একজন অদক্ষ মহিলা শ্রমিককে কাজ পেতে গেলে কাপড় খুলতেই হবে। সংসারটাতো চলছে-।
এখন কি করছে মেয়েটা কে জানে? কেই বা ভাবে ও বা ওদের মত মেয়েদের কথা। গোটা দেশ আপাততঃ মত্ত কোভিড আর করোণাকে নিয়ে। ব্যস্ত সোশাল ডিসট্যান্সিং আর “সমাজ কে দুশমন” ঠেকবাজদের নিয়ে। আপনি বাঁচলে বাপের নাম, একটু খারাপই না হয় থাকুক, খারাপ মেয়েরা।
No comments:
Post a Comment