Saturday, 6 November 2021

আমাদের কথা

আমাদের কথা ১০ই জুন,২০২২


👨🏻-(  কাঁধে টোকা মেরে, নিপাট ভালোমানুষের ঢঙে) একটা মশা কিন্তু আছে। 

👩🏻- (মোবাইলের দিকে তাকিয়ে অন্যমনস্ক ভাবে)আচ্ছা। 

👨🏻-(কিয়ৎক্ষণ পর,পুনরায় টোকা মেরে) ওটা কিন্তু কামড়াবে। 

👩🏻- (অন্যমনস্ক ভাবে) আচ্ছা। 

👨🏻-(আবার টোকা দিয়ে) আমাকে কামড়াতে এলে, আমি কিন্তু তোকে দেখিয়ে দেব। 

👩🏻-(বিরক্ত হয়ে মোবাইল বন্ধ করে,তার দিকে ফিরে) তাই দিস। তাইই দিস। মশার কামড় আমার দিব্যি সহ্য হয়,কিন্তু মাঝ রাতে আলো জ্বেলে মশা মারার নামে,‘হাইয়া’করে চিৎকার আর চড় থাপ্পড় খাওয়াটা জাস্ট অসহ্য।


আমাদের কথা ২০শে এপ্রিল, ২০২২


👩🏻-"হ্যাঁ গো, সালোয়ার পরব না শাড়ি?"

👨🏻-( চশমার ওপারে একজোড়া নির্বিকার চোখ, এক পলকের দৃষ্টি বিনিময় করে ডুবে গেল ফোনে।) ঝাঁকানো কাঁধ বার্তা বয়ে আনল, যা খুশি। 


👩🏻-"পরপর দুদিন সালোয়ার পরেছি, আজ বরং শাড়িই পরি নাকি? তবে যা গরম-।"


👨🏻-আপিসের জন্য দ্রুত  প্রস্তুত হওয়া দোলচালহীন কণ্ঠ জানাল,‘ তা বটে।’ 


👩🏻- (গোটা তিনেক শাড়ি বেরোল আলমারি থেকে, আনুসাঙ্গিক শায়া-ব্লাউজ সমেত। অতঃপর- )

‘এই শাড়িটা আর পছন্দ হচ্ছে না। এটা পরব না থাক। ওটা পরি। আচ্ছা ঐ শাড়িটার সঙ্গে এই ব্লাউজটা চলবে-’। 

👨🏻-(এতক্ষণের নির্বিকার চোখে এবার নামল তীব্র আতঙ্কের ছায়া, কোনমতে ঘাড় নেড়ে বলল,)‘হ্যাঁ।  হ্যাঁ। খুব চলবে। চালালেই চলবে-’।

👩🏻- (আরো কয়েকমিনিট উদ্দিষ্ট শাড়ি এবং ব্লাউজকে পর্যবেক্ষণ পূর্বক,) ‘নাঃ চলবে না। তোমায় প্রশ্ন করাই ভুল হয়েছে। তুমি কিছুই দেখো না। ভালো করে দেখো, ঐ শাড়িটার সঙ্গে ঐ ব্লাউজটা চলবে কিনা। আর এই হারটা কেমন মানাবে-’। 


👨🏻-(কয়েক গ্যালন কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন পূর্বক, মিনতি করে) ‘ আমাকে ছেড়ে দে না। আমি এসব বুঝি না। তুই বরং আমার শ্বশুরটাকে ফোন কর, কেমন? সে ঠিক বলে দেবে-’। 

👩🏻- নাঃ নিজের বাপকে খামোখা আর বিরক্ত না করে, নিজের মর্জি মোতাবেক তৈরি হয়ে বললাম,‘একটা ছবি তুলে দে অন্তত-’। উপরোধে ঢেঁকি গেলার মত গোটা কয়েক তুলে দিল বটে, সবকটা অখাদ্য। অতঃপর ফোনটা হাতিয়ে নেওয়া ছাড়া গত্যম্তর ছিল না। 


👨🏻-গোটা দুই তুলেছি কি তুলিনি,নীচে থেকে প্রথমে হুঙ্কার,তরপর অনুনয় বিনয় ‘ফোন দে। ফোনটা দে রে বাবা-। অফিস টফিস যেতে হবে তো নাকি? তুইও যা কেমন। আপিসটা করে আয়, বিকেলে ল্যাবেঞ্চুষ পাবি। এখন ফোনটা- ’। 


প্রসঙ্গত: শাড়িটার বয়স দুদশকেরও বেশি। কার যেন বিয়েতে পাওয়া উপহার, ভাগ্যে মা যত্ন করে তুলে রেখেছিল। এটা আর বললাম না, ওমন লক্ষ্মীস্বরূপা গুছানো মায়ের এমন অলবড্ডে,অগোছাল মেয়ে সংক্রান্ত ভাষণ এই আপিস টাইমে শোনার থেকে ফোনটা ফেরত দিয়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হল।

 আমাদের কথা,  ২রা নভেম্বর, ২০২১

👨🏻- আলোটা নেভা। 

👩🏻-দাঁড়া আজ ধনতেরাস, একটু সোনা কিনব। সবাই কিনছে আর ছবি দিচ্ছে। 

👨🏻-না। একদম নয়। রাত বারোটা বেজে গেছে। ধনতেরাস শেষ। এবার ভূতচরাস।

👩🏻- (লোভী সুরে) এই হারটা কিনে দিবি? পিসি চন্দ্র। বেশী নয়, মাত্র আটষট্টি হাজার টাকা বলছে অ্যামাজন। 

👨🏻-একদমই দেব না। আজ ধনতেরাস বলে সোনা চাইছিস, কাল ভূত চতুর্দশী, বলবি দুটো ভূত কিনে দে।

No comments:

Post a Comment