আচ্ছা যদি আবার দেখা হয়?
মাঝে মাঝেই ভাবি জানো, তুমিও ভাব কই?
ঘড়ির মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি আমি, একা উদাস-আনমনা,
হঠাৎ এগিয়ে এলে তুমি, “কেমন আছিস?”
পেটের মধ্যে ডানা ঝাপটালো হাজার প্রজাপতি, গলার কাছে প্রবল ব্যথা।
তবুও তোমায় চিনলাম কই, ঘুড়িয়ে নিলাম মুখ।
কেমন নীলচে হল তোমার মুখখানি, ব্যথা পেলে
বুঝি?
একটু না হয় পেলে, রোজই তো পাই আমি।
বলেছিলাম তোমায়, মনে আছে? তুমিই প্রথম পুরুষ,
বাবা হারিয়ে গেছে সেই কবে,
চটকলে কাজ করত বাবা, মস্ত নেতা, সাম্যের গান
গেয়ে দুবেলা দুমুঠো ভাতের দাবি খুব বেশি
ছিল কি?
সেই গানই বুঝি কাল হল, হঠাৎ হারিয়ে গেল বাবা,
আমি তখনও ঘুমিয়ে মায়ের অন্তরে।
তারপর সেকি লড়াই! দুমুঠো ভাতের জন্য, জানে
শুধু মা আর দিদি।
বাসন মাজতো মা, আর সেলাই করত দিদি, আর আমি?
স্কুল পেড়িয়ে পাড়ি দিলাম কলেজে।
কলেজে দেখা তোমার সাথে, মনে আছে? আমার আছে
জানো, তোমার সেই সমুদ্র নীল জিন্স আর
ভ্যানিলা গন্ধি শার্ট- লুকিয়ে দেখতাম তোমায়, লজ্জা করতো খুব। আমার সেই সস্তা ছিটের
জামা।
কি ভালোই না বেসেছিলাম তোমায়! তুমিও বেসেছিলে
ভালো, তাইতো বলেছিলে তখন?
কলেজ শেষে হঠাৎ হারিয়ে গেলে তুমি, ফোন করেছি
কত, তোমার মা ধরতো জানো?
বলতো ‘বোকা মেয়ে’। সত্যি কি বোকা ছিলাম আমি?
সত্যি দাঁড়িয়ে আছি আজো সেই ঘড়ি মোড়ে, থমকে
গেছে ঘড়ি। কিন্তু তুমি কোথায়?
এবার যদি প্রশ্ন কর। কেমন আছি আমি, জবাব দেব দেখো।
No comments:
Post a Comment