Thursday, 24 September 2020

তুত্তুরী উবাচ


তুত্তুরী উবাচ ১৮ই নভেম্বর, ২০২০


 👩🏻- একি রে! তোর হাতে এত মৌরি লাগল কি করে?

👧🏻- ঐ হাতটা ধুয়ে এসে, তুলে খেতে গিয়ে লেগে গেছে মা। 

👩🏻- হাত দিয়ে তুলেছ? ছি ছি,  চামচ দিয়ে তুলবে তো? 

👧🏻- (ভয়ে ভয়ে) চামচ দেখতে পাইনি তো?

👩🏻-চোখের সামনেই তো রাখা ছিল, বাবা- আমি নিলাম, আর তুমিই পেলে না?

👧🏻-ও হ্যাঁ, তাই তো! সত্যি মা,  হেঁ হেঁ, আমি একটা কুতকুতে হোঁদল। 

👩🏻-(হাসতে হাসতে প্রায় বিষম খেয়ে) কি অসাধারণ আত্মবিশ্লেষণ। আহাঃ।

👧🏻-( উৎফুল্ল স্বরে) আর তুমি হলে, জ্যান্ত ছানাওয়ালা পান্তু। ঐ যে দাদু 👴🏻 আমায় প্রায়ই ডাকে না,‘পান্তুর জ্যান্ত” বলে।

তুত্তুরী উবাচ ২২শে সেপ্টেম্বর,২০২০

👨🏻-(বাবা, ওষুধের বাক্স গোছাতে গোছাতে) আচ্ছা এই নরফ্লক্সটার ডেট ওভার হয়ে গেছে। এটা ফেলে দে। 

👧🏻-এ বাবা! এতো এক পাতা নতুন ওষুধ গো! এটা ফেলে দেবে?

👨🏻-(বাবা হাসি চেপে) এটা পেট খারাপের ওষুধ, তোদের হয়নি কেন? 

👧🏻- না বাবা, ফেলো না। এগুলো গুঁড়ো করে গাছের গোড়ায় দিয়ে দেবে মা। এই মা, একটু গুগল করে দেখো তো, গাছের গোড়ায় নরফ্লক্সের গুঁড়ো দিলে কি হয়?

👨🏻-( বাবা, খুকখুক করে হাসতে হাসতে) কি আর হয়? গাছের ইয়ে বন্ধ হয়ে যায়। মায়ের গাছের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে মা তোকে আর আস্ত রাখবে? তুই বরং ওটা ফেলেই আয়।

তুত্তুরী উবাচ, ১২ই সেপ্টেম্বর ২০২০

👩🏻-(মা, কেজো স্বরে) অনেক বেলা হয়েছে, এবার একটু পড়তে বসো, না? 

👧🏻-(কয়েক মুহূর্ত পড়ার নাটক করে) চোখে অন্ধ, মুখে গন্ধ। মা তুমি এমন কাউকে চেন?

👩🏻- (মা হতভম্ব হয়ে) না তো? কেন?

👧🏻-এই একটু মনে হল। তোমার মোবাইলটা দাও তো দেখি, ধৃতরাষ্ট্রের মুখে দুর্গন্ধ ছিল না? 

👩🏻- (মা বিরক্ত হয়ে) যত ফালতু কথা, কি পড়ার সময়ই মনে পড়ে?

👧🏻- ( আরো খানিকক্ষণ নীরবে বইয়ের পাতা উল্টে) মা, পরের দিন যখন কুট্টুসের 🐕 সাথে দেখা হবে, কাকিমাকে ভিডিও কল করব, কেমন? কাকিমা কুট্টুসকে দেখতে চেয়েছে। 

👩🏻-(মা, আরো ক্রুদ্ধ স্বরে) যত বাজে কথা। কাকিমা মোটেই এমন কিছু বলেনি। আমি জানি। 

👧🏻-(আহ্লাদী সুরে) কাকিমা বলেনি তো। আমিই কাকিমাকে বলেছি, পরের দিন কুট্টুস দেখাব। কুট্টুসের কাণ্ডকারখানা শুনে কাকিমা তো হেসেই খুন। জানো তো মা, কুট্টুস এত ভালো, ওকে কামড়ে দিলেও কিছু বলে না। 

👩🏻-(মা, আতঙ্কিত স্বরে) মানে? তুই কুট্টুসকে কামড়ে দেখেছিস নাকি?

👧🏻-( আহ্লাদী সুরে) হ্যাঁ তো। ও বারবার আমায় কামড়াচ্ছিল, তাই বললাম, “আমিও কামড়াতে পারি দেখবি?” বলে ওর কানে কট করে কামড়ে দিলাম। 

👩🏻-(মা, আতঙ্কিত স্বরে) কি সর্বনাশ! এষা পিসি জানে? তুই তার কুতুয়াকে কামড়েছিস?

👧🏻-(দুষ্টু স্বরে) না বোধহয়। তোমরা তখন গল্প করছিলে।

👩🏻-(মা, মনখারাপী সুরে) জানতে পারলে, আর আসবে না এষা পিসিরা। তুই ওদের কুতুয়াকে কামড়েছিস- 

👧🏻-(আশ্বস্ত করার ভঙ্গীতে) আরে না না। ওরা কিছু বলবে না। আমি কুট্টুসের পিঠের ওপর বসে ক্যাসল স্টোরি খেললাম। তারপর ওর চোখে আলো ফেললাম, তারপর ওর সঙ্গে ভৌ ভৌ করে গল্প করলাম, তারপর ও আমায় কামড়াল, আমিও- 

👩🏻-(মা, অবসন্ন সুরে) থাক মা। তুমি ঐসবই করো। পড়াশোনা আর করে কি লাভ? আর করতে হবে না। 

👧🏻-(তড়াক করে লাফিয়ে উঠে, বইখাতা বন্ধ করে) হ্যাঁ মা। চলো গরু চরাই।🐄

No comments:

Post a Comment