Saturday, 2 November 2019

গন্তব্য- চন্দননগর ও মানকুণ্ডু

গন্তব্য -চন্দননগর
সে অনেককাল আগের কথা,বাংলার নবাব তখন মহামহিম জনাব আলিবর্দী খাঁ। কৃষ্ণনগরের রাজার বাকি পড়েছে অনেক টাকার খাজনা। নবাব  তত্ত্বতালাশ করতে পাঠালেন তার দেওয়ান বাবু রাজারামকে। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র অকপটে স্বীকার করলেন তাঁর অপারগতা তথা আর্থিক দুরাবস্থা। বড় ভালো লেগে গেল দুজনের একে অপরকে। জমে উঠল সখ্যতা। সযতনে রাজাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার চাবিকাঠিটি তাঁর হাতে তুলে দিলেন বাবু রাজারাম। চাবিকাঠির নাম বাবু ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। সম্পর্কে রাজারামের কনিষ্ঠ ভ্রাতা। পেশায় ফরাসীদের দেওয়ান। চন্দনননগর তখন ফরাসী উপনিবেশ। ইংরেজদের সাথে ঠুঁইঠাঁই নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এই সংঘর্ষে ফরাসীদের হাত শক্ত করতেন এই বাবু ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। তাঁর অগাধ টাকা। কৃষ্ণচন্দ্রের সাথে প্রগাঢ় সখ্যতা জমে উঠল ইন্দ্রনারায়ণের। কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজায় সখাকে সাদর আমন্ত্রণ  জানালেন রাজামশাই। বড় ভালো লাগল ইন্দ্রনারায়ণের এই চতুর্ভুজা সিংহবাহিনী বিশালাক্ষী দেবীকে। ফিরে এসে পরের বছর থেকে চালেরগুদামে শুরু করলেন দেবীর পুজা। সে অনেক বছর আগের কথা। নিন্দুকে বলে সাড়ে তিনশো বছর। বা আরো পুরাতনও হতে পারে। চাউলপট্টীর বড়মা চন্দননগরের প্রাচীনতমা। বড় জাগ্রত এই দেবী। দেবীর গায়ে অগুনতি সোনারূপার গয়না। গলায় অন্তত গোটা সাতেক বিভিন্ন আঙ্গিকের সীতাহার হার। আছে চন্দ্রহারও। মাথায় বিশাল শিখিপুচ্ছ দ্বারা অলংকৃত অতিকায় রূপার শিরোভূষণ। যার কেন্দ্রস্থলে দেবী পরেন একটি সোনার কিরীট। দুই কানে বিশাল রূপার কানের মাঝ বরাবর শোভা পায় অনুপম ডিজাইনের সোনার ঝুমকো। দেবীর চারহাতে অসংখ্য রূপার চুড়ি, বালা।  নজর কাড়ে হাতের বিশাল হীরক(?)খচিত আঙটিটি।বহুদূর থেকেও যার চমক লুকানো যায় না। দেবীর মাথার সাপ, হাতের কমল, চাঁদমালা, এমনকি চরণে গোঁজা ফুলটিও রূপার।এমনকি সিংহের মাথায়ও একাধিক মুকুট। সিংহের গলায় ঝোলে খামি খামি রূপার টাকার মালা।নিন্দুকে বলে দেবীর গহনার বর্তমান মূল্য কয়েক কোটিরও বেশী।  প্রস্তুত হচ্ছেন দেবী। অচীরেই ঝলমলিয়ে উঠবেন আভরণে-
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ ষষ্ঠী

গন্তব্য -চন্দননগর
বোড় কালিতলা, চন্দননগর। বয়স-মাত্র ৫০।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ ষষ্ঠী

চন্দননগরের বোড় মা। বয়স বেশী না, ৫২ বছর মাত্র।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী

বোড় তালডাঙা, চন্দননগর
সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী

কাছারি ঘাট। চন্দননগর।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী

অম্বিকা অ্যাথলেটিক ক্লাব। তেলেনিপাড়া। মানকুণ্ডু। এণাকে কিন্তু মিস করবেন না। যেমন সুন্দর এবং অভিনব মণ্ডপসজ্জা, তেমনি অপরূপা প্রতিমা।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী

তেমাথা শিবমন্দির।  মানকুণ্ডু। শুধু বিশালাক্ষি নন,ইনি বিশালাকৃতিক্সও বটে।
উৎসবের নাম জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী

নিয়োগী বাগান।  মানকুণ্ডু।  চলছে শেষ পর্যায়ে দেবীর অঙ্গরাগ।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী


বাগবাজার। চন্দননগর। আমার প্রিয়তম পুজো। যাই বলুন কলকাতার মত চওড়া রাস্তা বা বিশাল প্রাঙ্গণ কিছুই তেমন নেই চন্দননগর,ভদ্রেশ্বর বা মানকুণ্ডুর। ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে সামান্য পরিসরে গড়ে ওঠে চোখ ধাঁধানো মণ্ডপ। রাজপথ ধুয়ে মুছে আল্পনা দেয় পাড়ার বউ-ঝিরা। হয় আল্পনা প্রতিযোগিতাও। তেমাথার মুখে বিশালাকায় দেবী দণ্ডায়মান। দেবী যথেষ্টই জাগ্রতা। গহনার আধিক্য দেখুন না। মাথায় রূপার ফিলিগ্রী করা অতিকায় মুকুট। কপালে ঝাপটা। সোনার ত্রিনয়ন। নথ। গলায় সোনার চিক এবং সীতাহার।এছাড়াও বেশ কয়েকটি সোনার হার। কানে রূপার কানফুল। হাতে রূপার বাজুবন্ধ। সোনার চুড়ি। রূপার দু দুটি চাঁদমালা। এমনকি সিংহীর মাথায়ও রূপার মুকুট।তবে ঠাকুর দেখবেন খুব সাবধানে, ডাইনে বাঁয়ে টোটো আর বাইকের অবাধ গতি যে কোন সময় আপনাকে দেবীর দরজায় পৌঁছে দিতে পারে। অবশ্য যদি যথেষ্ট  পূণ্যকর্ম করে থাকেন। নাহলে কপালে হাসপাতাল দর্শন অবধারিত। ইয়ে বলতে ভুলে গেছি,দেবীর বয়স বেশী না। মাত্র ১৮৫বৎসর।
#উৎসবের_নাম_জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী

হেলাপুকুর। চন্দননগর। মণ্ডপসজ্জা পুরোপুরি আমাদের ত্রিধারার ফটোকপি। তবে জনশ্রুতি যে দেবী এবং তাঁর বাহনের যাবতীয় অলংকার নিখাদ সোনার। সৌজন্য সেনকো।
উৎসবের নাম জগদ্ধাত্রী
শুভ পঞ্চমী

No comments:

Post a Comment