আয়নার সাথে বিশেষ প্রীতি কোনদিনই ছিল না মেয়েটার।
আয়না যে তাকে দেখলেই বলে, "মেয়ে তুই বড় সাধারণ।"
আয়নার কথা শোনার সময় কোথায়, নির্দয় জীবন সংগ্রামে ব্যপ্ত যে-
কদাচিৎ গভীর রাতে গিয়ে বসত, আয়নার কাছে , আলতো হাতে ধুলো ঝাড়ত, আয়না মুখ খুললেই, সে উঠে যেত।
হঠাৎ একদিন প্রশ্ন করল, “ বল দেখি আয়না, কেমন লাগছে?”
প্রভাতী সূর্যের আলোয় চোখ ঝলসে গেল আয়নার, মৃদু হেসে বলল, “মন্দ কি?”
তারপর আয়নাই হল তার প্রিয় সখী। আয়না জানল, কে যেন একটা এসেছে।
তার জন্য বার মাসই বসন্ত, তার জন্যই দুধের সর, মেঘলা রঙের শাড়ি, অপটু প্রসাধন, দুই ভ্রুর মাঝে ছোট্ট কুমকুমের ছোঁয়া।
সেদিন প্রাক বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবিত মহানগর, জল থৈথৈ চরাচর, উদ্বিগ্ন আয়না অপেক্ষা করছিল তার প্রিয় সখীর-
সে এল, ধুয়ে গেছে কুমকুম, ঝরে গেছে প্রসাধন, মাথা নত করে বসে রইল বহুক্ষণ,
বুঝেও নির্বাক রইল আয়না। চোখ তুলে তাকালো সে আয়নার দিকে, “চলে গেছে।”
তার চোখে অকাল শ্রাবণ, “ সে আমার ছিল না। তবু –”
মৃদু হাসল আয়না, মাথা নত করে সে বলল, “ তুমি বলেছিলে। সত্যি বড় সাধারণ আমি। যদি আর একটু –”
“তুমি অনন্যা!” জোর গলায় বলে উঠল আয়না। অবিশ্বাসী চোখে তাকালো সে, মুছে নিল অশ্রুবারি, মেরুদণ্ড ফুলিয়ে বলল, “করুণা করছ? তুমিও”
আবার হাসল আয়না, “ পাগল? কাল আবার সূর্য উঠবে। যত্ন করে আঁকড়ে থেকো এই হঠাৎ পাওয়া মন খারাপ-”
#AninditasBlog
https://www.facebook.com/amianindita.blogspt.in/
No comments:
Post a Comment