Friday 28 September 2018

মধ্যমেধার মধ্যবিত্তের রোজনামচা

মধ্যমেধার মধ্যবিত্তের রোজনামচা ১৩ই নভেম্বর,২০১৮। ছটপুজার পূণ্যলগ্নে-

ইটালী আর পূর্ণাপাণি। বরযাত্রী আসবে সি প্লেনে। ধরবে তাতে ১৪ জন।কি তাজ্জব ব্যাপার দেখুন দুই সপ্তাহে মারা গেছে বেশী না,মাত্র ১৪জন।
তো যা বলছিলাম আর কি, ফিরে চলুন ইটালীতে, এত্ত বড় বিয়েয় অথিতি মাত্র ১৪জন? তাও আবার হয় নাকি হে? বাকিদের জন্য রইল বিলাসবহুল প্রমোদতরী। এদিকে পূর্ণাপানি,নামটা দারুণ, আগে তো কিছুই ছিল না। এখন দেখুন-  বসতবাড়ি,চাষের জমি, ইলেকট্রিসিটি থেকে অবৈতনিক স্কুল। অভাব শুধু নজরদারি। তাহলে বলি শুনুন,লোকগুলো তেমন সুবিধের না। যা পায়, সব বেচে খায়। মদ খায় না,মদই খায় মানুষগুলোয়,বুঝলেন কি না।
তরচেয়ে চলুন ইটালী যাই। বর-বউয়ের পোশাকআশাক,মস্তবড় ডিজাইনারের ব্যস্ততা যে চূড়ান্ত, রঙমিলান্তি সাজেগোজে চকমকাবে বাবুবিবি। আহাঃ যেন তাসের দেশ।বলতে ভুলে গেছি সেই মেয়েটা শুনি আর স্কুলে আসে না। নানা ইটালী নয় খাস কলকাতা। কতই বা বয়স,বছর ছয়েক। এরই মধ্যে এতকিছু, শুনছি মাস্টারটা জামিন পেল। ছাড়ুন শুধু ছুটির দিনে অকারণে বিষণ্ণতা আর মনখারাপ।
ইটালীতে সুইজারল্যাণ্ডের  শেফের সাথে চুক্তি হল,সব পদই হতে হবে আনকোরা। অন্য কোথাও রাঁধলে পরেই পরতে হবে হাতকড়া। অথিতিদের জন্য শুনি নিখাদ সোনার কাটলারি- অন্যকোথাও মেয়ে হলেই মারধর আর গাজোয়ারি।পাঁচের পাতায় সাতের কলম,পড়েছেন নাকি বাবুবিবিরা। প্রথম সন্তান মেয়ে হলে পণ চাওয়া হল লক্ষ দুই। জামাইয়ের পেশা দীনমজুরী, তবে সাকিন খাস  দুবাই। দ্বিতীয়বারে চাপ ছিল খুব, ছেলেই চাই,দিতে হবে না বংশে বাতি? বেচারা মা ডাহা ফেল। আবার যখন মেয়েই হল, দাবী বেড়ে হল পাঁচ লাখ। বাঃ স্ত্রী কন্যাদের আজীবন ভরণপোষণ, এটুকু তো দিতেই হবে। তারওপর বিয়েশাদি। লাখ পাঁচেক আর এমন কি? মেয়ের বাড়ি বোধহয় আর পারেনি, পরিণামে মারধর আর শ্বাসরোধ। গলা টিপেও, নাঃ মরেনি। মায়ের জান। তবে আহত বেশ গুরুতর।আপাততঃ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।আচ্ছা হাসপাতালে কি কাগজ পাবে? পেলে নির্ঘাত সেও পড়ছে, কত দফায় বিয়ে হবে,হরেক প্রথায় অনুষ্ঠান।তারওপর বম্বে আর বেঙ্গালুরু,রেডি ফর জমকালো রিশেপসন।
©Anindita Bhattacharya
মধ্যমেধার মধ্যবিত্তের রোজনামচা- 30.09.18

সকাল থেকে ধস্তাধস্তি  চলছে মা আর মেয়ের। কাল পরীক্ষা,মায়ের দৃঢ় বিশ্বাস মেয়ে হলদিরামের লাড্ডু পাবে। মেয়ে একটু ভাবুক প্রকৃতির,লিখতে পড়তে গেলেই মাথায় বিশ্ব সংসারের ভাবনা চিন্তা গজগজ করে ওঠে। যেমন আজ বলছিল,“বইয়ের পাতা গুলো কচকচিয়ে চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারলে কেমন হত। বই খেতাম আর খাতায় গিয়ে-”। রবি ঠাকুরের তোতা কাহিনী মনে পড়ে গেল।

অশান্তির পারদ চড়ছে দেখে বাবা গৃহত্যাগ করল,নাহলে দুপক্ষই অবলা পুরুষটিকে ধরে টানাটানি করবে যে। এসব ক্ষেত্রে বাবা অবশ্য প্রকট ভাবে কন্যাকে সমর্থন করে,তবে দিদিমণি রূপে গিন্নীকে সাংঘাতিক ডরায়। এগারোটা নাগাদ তুত্তুরী ঘোষণা করল,“আর পড়তে পারব না।” তারপরই আব্দার,“আজ আর মাছের ঝোল ভাত খাব না। আজ স্পেশাল কিছু বানাও। ”স্পেশাল বানানোই যেত,তবে তার জন্য প্রস্তুতি লাগত সকাল থেকে। বেলা দেড়টা এবাড়ির স্টান্ডার্ড লাঞ্চ টাইম। সাড়ে বারোটা থেকেই আমার বর আর মেয়ে হ্যাংলা বেড়ালের মত রান্নাঘরের রাউণ্ড দেওয়া শুরু করে। হাঁড়িকুড়ি হাটকে দেখে কি রান্না হল। সত্যিই তো,চাকুরীজীবি পরিবারের রবিবার, বাবা বলত,“সারা সপ্তাহ গিলি। আর রবিবার খাই। ”

অগত্যা, কি বানাই? ঘরে মাছ ছিল দুরকমের। চটজলদি তিনপিস ভেটকি মাছকে হলুদ, নুন,লেবুর রস আর অল্প লঙ্কাগুঁড়ো মাখিয়ে জরতে দিলাম। এবার শিলনোড়ার পালা। দুচামচ সর্ষে আর এক চামচ পোস্ত বাটা হল। মা শিখিয়েছিল সর্ষে বাটার সময় নুন দিয়ে বাটলে নাকি তেতো হয় না। তাই নুন দিয়েই বাটলাম শুকনো শুকনো করে। এবার জরানো ভেটকীর গায়ে মাখিয়ে ,পরিমাণ মত সর্ষের তেল আর গোটা তিনেক চেরা কাঁচা লঙ্কা সহ অ্যালুমিনিয়ামের টিফিন বক্সে সাজালাম। আর একটা জিনিস দিলাম হাফ চামচ মাদার ডেয়ারির মিষ্টি দই। ভালো করে মিশিয়ে শুকনো প্রেশার কুকারে নুন দিয়ে বিছানা পেতে তার ওপর বসিয়ে দিলাম কৌটো টাকে। ওয়েট লাগালাম না। গ্যাস থাকল সিমে।  আধ ঘন্টা চল্লিশ মিনিটের মধ্যেই ভুরভুর করে ভাপা ভেটকীর গন্ধ বেরোতে লাগল। পুঁচকেটা একবার ভাববাচ্যে জিজ্ঞাসা করল,“কি রান্না হচ্ছে আজকে?” বুঝলাম সকালের অভিমান এখনও কাটেনি।

তাহলে তুত্তুরী প্রিয়পদ হয়ে যাক-মুড়িঘন্ট।মুঠি দুয়েক আতপচাল ভিজিয়ে দিলাম বাটিতে। ছোট ছোট টুকরোয় কেটে নিলাম একটা গোব্দা আলু। একটা ধেড়ে আর একটা খুদে পেঁয়াজ কাটা হল ঝিরিঝিরি করে। পেতে রাখা শিলে এবার পালা রসুন আর আদা বাটার। সব ঝপাঝপ রেডি করে এবার কড়ায় তেল দিয়ে ভাজতে দিলাম নুন হলুদ মাখানো চালানী কাতলার বিকট মাথা। এতক্ষণে তুত্তুরীর পিতা প্রভাতফেরী সেরে ঘর্মাক্ত কলেবরে বাড়ি ফিরেছেন। এসেই রান্নাঘরে উঁকি,পিছন পিছন ছানা বেড়ালের মত ঢুকতে এল তুত্তুরী,সর্বনাশ সারপ্রাইজ নষ্ট হয়ে যাবে তো। ভাববাচ্যে তাই গলায় ভয় মিশিয়ে বললাম,“কাতলার মাথাটা কিন্তু এখনই ফাটবে। কারো ফোস্কা পড়লে আমি দায়ী নই। ” ব্যাস ময়দান ফাঁকা।
ভাজার সাথে সাথেই একটু থেতলে দিলাম মুড়োটাকে,যাতে ভেঙে ভেঙে যায়। প্রকাণ্ড ঘিলু সমেত মাথা দেখতে ভালো হলেও খেতে ভালো লাগে না মোটেই। ভাজা ভাজা হয়ে এলে,তুলে রেখে ঐ তেলেই একটা তেজপাতা,গোটা দুয়েক শুকনো লঙ্কা,আইসক্রীমের চামচের একচামচ জিরে, দুতিনটি লবঙ্গ, দারুচিনির টুকরো আর দুটি ছোট এলাচ ফোড়ন দিয়ে প্রথমে আলু অতঃপর পেঁয়াজ দিলাম।  নুন হলুদ দিয়ে ভাজা ভাজা করে টমেটো কুচি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কসার পর আদা রসুন বাটা আর অল্প লঙ্কাগুঁড়ো মেশালাম। কসতে কসতে তেল ছাড়লে ভেজা আতপ চালের পালা। চাল মিশিয়েও আমি কিছুটা ভেজেনি। যখন ভালোমত ভাজা হয়ে আসবে তখন মিষ্টি দিয়ে জল ঢেলে দেওয়া। চাল অর্ধসিদ্ধ হয়ে এলে মাছের মাথার টুকরো গুলো মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে সিমে বসিয়ে রাখা। শেষে জল মরে গেলে নুন মিষ্টি চেখে দেখে আধ চামচ ঘি মিশিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখা। একটু ঝুরো ঝুরো হবে। খেয়াল রাখবেন চাল যেন গলে না যায়। আর চাল যেন খুব বেশীও না হয়। মুড়িঘন্ট কখনই বিরিয়ানি তুল্য নয়।
পরিশেষে ওলের বড়া। ওল শৌভিকের প্রিয় সবজি। আমাদের বাড়িতে বারো মাস, অফিসের দিনগুলিতে হয় ওল সিদ্ধ হয়, নাহলে উচ্ছে সিদ্ধ।  সিদ্ধ ওলে ঘেন্না ধরে গেল মাইরি। ওলের বড়া আমার শাশুড়ী মায়ের রেসিপি। ওলকে হাল্কা সিদ্ধ করে, কাঁটা চামচ দিয়ে থেতলে,পরিমাণ মত নুন,মিষ্টি, কাঁচা লঙ্কা কুচি, দুএক চিমটি বেকিং পাউডার, কর্নফ্লাওয়ার, অল্প আটা আর একটা ডিম মিশিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে চ্যাপ্টা বড়ার আকারে ভাজা। ছোট গোল গোল করেও ভাজতে পারেন। দেখতে ভালো লাগে। তবে সেক্ষেত্রে আমার সংখ্যা অনেক বেশী হত,আর আমার স্বাস্থ্যসচেতন বর দুটির বেশী ভাজা খাবেন না,অগত্যা বড় বড় আর চ্যাপ্টা করে ভাজা।

খেতে বসতে বসতে পৌনে দুটো বাজল। খেয়ে উঠে অবশ্য বাপ-মেয়ে দুজনে সম্মিলিতভাবে  বাবারে-মারে করছিল। প্রচুর খাওয়া হয়ে গেছে। আর জল খাবারও জায়গা নেই,  ইত্যাদি আরকি।  এই না হলে মধ্যবিত্ত বাঙালির রবিবার।

মধ্যমেধার মধ্যবিত্তের রোজনামচা- 28/09/18

ডিপার্টমেন্টাল পরীক্ষা দিতে গেছি,পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ভিতরের রেলিংএ ঠেস দিয়ে দুই সখীতে শেষ মুহূর্তের জন্য বইগুলোকে আত্মস্থ করার চেষ্টা করছি, সামনেই বিয়ে, আর লিখে দিতে পারি বিয়ের পর শতকরা পঞ্চাশ ভাগ বাঙালিনীর মতই আর কোন পরীক্ষায়ই পাশ করা এই অধমের কম্ম নয়। আচমকা  মাথায় এক চাঁটি। কে রে?নেহাত পিএসসি, আসেপাশে গম্ভীর মুখে বিভিন্ন সার্ভিসের লোকজন অধ্যয়নরত তাই “শালা”টা কোনমতে গলদ্ধকরন করলাম। তাকিয়ে দেখি জনৈক সুহৃদ দন্তবিকাশপূর্বক দাঁড়িয়ে আছে। খিস্তি ছাড়া কোনদিন একে অপরকে সম্বোধন করিনি, আর সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট অ্যাক্ট তখনও কষ্টকল্পনা,তাই ভদ্র ভাষায় বললাম,“মারছিস কেন রে আপদটা। ” মারার কারণ অচীরেই বুঝলাম, হবু বরের প্ররোচনায় অরকূটে আগের রাতেই রিলেশনশিপ স্টেটাস কমিটেড করেছি। বিশদে বলতে হল কাকে বিয়ে করছি,কেন করছি,কোথায় থাকে। ভিআইপি শুনে বলল,“মালদার পার্টি ফাঁসিয়েছিস শালা। ” তো যাই হোক বেশ খানিক হাসাহাসির পর বলল,“শোন না, বিয়ের পর প্রথম পরকীয়াটা আমার সাথেই করিস কিন্তু। ” আহাঃ প্রথম পাওয়া প্রেম প্রস্তাবে এত পুলকিত হইনি, যত না প্রথম পরকীয়ার প্রস্তাবে হয়েছিলাম। পরীক্ষা দিয়ে উড়তে উড়তে সল্টলেক সিটি সেন্টার।  হবু বরকে বললাম, বিশদে। ভাবলাম খেপে টেপে যাবে, ওবাবা শৌভিক বলল,“ভালই তো। অ্যাপ্লিকেশন জমুক। সময় এলে দেখা যাবে।”

পরকীয়া নিয়ে যাবতীয় রসালো গপ্পের সঙ্গী আমার বর, আহা বৈবাহিক সম্পর্কে আবার লুকোছাপা কিসের মশাই।বিয়ের আগেই শৌভিক জানিয়ে দিয়েছিল,“আমার পরকীয়াতে একবিন্দু আপত্তি নেই। বরং বলিস আমিই খুঁজে দেব।” হ্যাঁ দেয় তো,না বলতেই দেয়, বাজারের মাছওলা,সিকিউরিটি গার্ড,হোঁৎকা হাতি মহাচোর অ্যাকাউন্টস্ অফিসার আর কত বলব। প্রসঙ্গতঃ এদের প্রত্যেকেরই ভয়ানক সুন্দরী বউ ছিল বা আছে। বিরক্ত হয়ে বছর পাঁচেক আগে বললাম,“থাক বাপ। তোকে আর খুঁজতে হবে না। তুই যে কার জন্য খুঁজিস আমার বুঝতে বাকি নেই। ” সেদিন কাদের যেন বলছিলাম,“সিরিয়ালসি মাইরি,আমি পরকীয়া করলে,আমার বরই বাক্সপ্যাঁটরা গুছিয়ে বাসে তুলে দিয়ে আসবে। এমনকি টিকিটও কেটে দেবে। ” তারা যদিও বলল,“পাগল নাকি?চিন্তা করিস না অনি,তোর বর বাসে তুলে দিলেও আমরা নামিয়ে আনব। ”

কাউকে রূপে বা গুণে আপনি যদি মোহিত হন, তাতে কি আদৌ কোন দোষ আছে?ঐ যে বলে না দিল তো বাচ্ছা হ্যায় জী। রীতি শৃঙ্খলের বাঁধনে আবার প্রেমকে চাপা দেওয়া যায় নাকি?এতো ধূপের ধোঁয়ার মত, যতই দরজা জানলা বন্ধ করে রাখুন,ব্যাপন পক্রিয়ায় সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়বেই। ভারতীয় বলে গর্ব বোধ করেন,নিজেদের ঐতিহ্যশালী সনাতনী সংস্কৃতি নিয়ে আত্মশ্লাঘায় ভোগেন আবার পরকীয়াকে খিস্তি মারেন? কি মাইরি আপনি? কৃষ্ণ করলে লীলা আর আমাদের যত দোষ?

দুটি পূর্ণবয়স্ক হৃদয়ের সম্মতিক্রমে যা ঘটে তা কি আদৌ অপরাধ হতে পারে?অনুগ্রহপূর্ক একে জমিদারদের রক্ষিতা রাখার সাথে তুলনা করবেন না। ব্যতিক্রম সর্বত্র বিরাজমান। আর বিয়ে না করে তো দয়া করে পরকীয়া নিয়ে কোন মন্তব্য করবেন না, ওসব আমরাও করতাম, জীবন ভীষণ জটিল জানেন তো,আর জগৎ জোড়া প্রেমের ফাঁস, পা দিলেই ধপাস। কবে কোথায় যে জীবন আপনার জন্য ফাঁস দিয়ে প্রতীক্ষারত,হয়তো আপনি জানেনই না। আরে ভাই কে জানে কঘন্টা আছে এই জীবনটা। আর যদি আপনি বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও আপনি দাবী করেন যে আপনার পরনারী বা পরপুরুষে ছিঁটেফোঁটাও উৎসাহ নেই,তাহলে দাদা/দিদি ব্যাপারটা আসলে ঠিক উল্টো নয় তো? ছাড়ুন তো,আপদ আঁতেল আর অশিক্ষিত গোভূতদের লুচির মত ফুলতে দিন। গলা খুলে গান, “তুঝকো ভি হ্যায় ইজাজৎ করলে তু ভি মুহাব্বত-। ”

©Anindita Bhattacharya

No comments:

Post a Comment