Wednesday, 19 August 2015

অনির ডাইরি ১৮ই অগস্ট ২০১৫

ভাগ্যে আজ ধর্মঘট ছিল, আমাদের মত কতিপয় বেতনভূক দাসানুদাস ছাড়া অধিকাংশ ডালহৌসী গামি বাবু ফোকটে ছুটি কাটাচ্ছিল তাই রক্ষা   না হলে আরো কিছু কটুকাটব্য শুনতে হত আর কি  কোনটাই অবশ্য প্রত্যক্ষ ভাবে  আমাকে উদ্দেশ্য করে নয়, তবে আমার জাতের জন্য তো বটেই  না না বাঙালি , ঘটী বা ভারতীয় নয় এছাড়াও আমার একটা জাত আছে   বুঝতে পারলেন না? আমি দাবী করছি যে আপনিও আজ বা গতকাল এই নিয়ে আপনার সুচিন্তিত এবং মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেছেন  হতে পারে জাগতিক ব্যাপার স্যাপারে আপনি উদাসীন কিন্তু  গতকাল খড়দায় যা হয়েছে তা নিয়ে আপনার আদৌ মাথাব্যথা নেই এটা হজম করা বেশ কষ্টকর   একদঙ্গল মহিলা নিত্যযাত্রী এতবড় অবরোধ ঘটিয়ে ফেলল? কি মানা যায়? তাও বরাবরের মার খাওয়া অবলা সুলভ মিনমিনে প্রতিবাদ নয়, অহিংস উপবাস ধর্ণা নয় রীতিমত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই   পুরুষ সহযাত্রী দের বেধড়ক পেটানো  পুলিশ পড়ুন পুং পুলিশের ডান্ডা খেয়েও রণে ভঙ্গ না দিয়ে , শেষমেশ প্রবল পরাক্রান্ত ভারতীয় রেলকে মাথানত করিয়ে ছাড়ল!!! মশাই  এতো আদৌ সহজপাচ্য নয়  এতএব এর শবব্যবচ্ছেদ আসু প্রয়োজন

দেখুন আমার কথা শেষ হবার আগেই আপনি  আমায়  ভুল বুঝছেন  আমি হতভাগ্য স্বঘোষিত নারীবাদী হতে পারি, কিন্তু  যে কোন সংরক্ষণের আমি ঘোর বিরোধী আর পথঅরোধ ব্যাপারটাই আমার মতে বেআইনী হওয়া উচিৎ জানেন যখনই ফেসবুকে কোন মহিলা সংক্রান্ত খবর দেখি, শতকরা  নিরানব্বই ভাগ নারী নির্যাতন  ঘটিত হয় যদিও, আমি খবরের নীচের মন্তব্য গুলি পড়ি  কখনও পড়ে দেখেছেন? ব্যাপক রসের খোরাক মশাই   কোথাও  কোন অবলার ওপর কোন নরাধম অত্যাচার করেছে, দুই বাংলার কিছু পুরুষ ঝাঁপিয়ে  পড়ে তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণে  কি অদ্ভূত মানসিক মিল মশাই কে বলবে দুটি  আলাদা দেশের বাসিন্দা   কিছু লোক বলে, হায় কপাল তুই দিব্যি  ফূর্তি করে নিলি, আমার নম্বর যে কবে আসবে? এগুলো একেবারেই অর্বাচীন   লেখাপড়া জানা মধ্যবিত্ত  সম্প্রদায় আবার এর জন্য মেয়েদের  উদ্দামতা তথা শর্ট স্কার্ট ইত্যাদি পরাকে দায়ী করে যেন ধর্ষিতা মাত্রই স্বল্প পোশাকী হয় যাই হোক খড়দার ব্যাপারটা নিয়ে মন্তব্য গুলি পড়ছিলাম  বিশুদ্ধ দেশীয় মতামত একদল বলছে মুখে সমানাধিকারবাদ এর কথা বলে অথচ? হাসি পাচ্ছিল যে দেশটা আদ্যন্ত সংরক্ষণ নির্ভর  ক্রীমি লেয়ারে থাকা জনগন সামান্য সুযোগ হারাতে চায় না, প্রতিনিয়ত যেখানে সংরক্ষিত হবার জন্য আন্দোলন চলে, সেখানে গুটিকত মহিলার জন্য সংরক্ষিত একটা ট্রেন মেনে নিতে কি কষ্টই না হচ্ছে


দেখুন মশাই আমি দরিদ্র ব্রাহ্মণ সন্তান , জীবনেও কোন সংরক্ষণের সুবিধা পাইনি শুধু বাসের কিছু সিট আর লেডিজ কম্পার্টমেন্টের সুবিধা বাদে  তবে এই সংরক্ষণ যে কেন  তা নিয়ে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন   শুধু দুটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলে শেষ করব মনে আছে কিছু  বছর আগে মেট্রো রেলের কিয়দাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের ব্যর্থ প্রচেষ্টা  হয়  তার বিরুদ্ধে পুং যাত্রীরা অবরোধ করেননি  শুধু কুৎসিত  মন্তব্যই যথেষ্ট ছিল  অবলারা দিক মাড়ানো ছেড়ে দিয়েছিল  দ্বিতীয়টি হল লোকাল ট্রেনের একটি কামরা দিনের কয়েকঘন্টার জন্য মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করার একটা চেষ্টা করা হয়  আমি তখন খড়্গপুর লোকালের নিত্যযাত্রী   সে তিক্ত  অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে আমি অপারগ  বার বার কি মার খাওয়া যায় বলুন?

No comments:

Post a Comment