কতদিন
পরে এলাম। প্রায়
তিন মাস। সেই দূষিত বিষাক্ত
বাতাস
আর
পুতিগন্ধময়
পথঘাট, নিয়ন্ত্রনহীন
যানবাহনের বেয়াক্কেলে শোরগোল যদিও সম্পর্কে
মহানগরের
বৈমাত্রেয় ভাই। এঁদো গলি
, কানাগলি, গাড়ি ঢোকে না, বিরক্তিকর
কুকুরের বিষ্টা
। আচ্ছা আপনাদের মহল্লার সারমেয়কূল
ও কি
এতটাই পেটরোগা?
প্যাচপ্যাচে কাদা,খানাখন্দ, জমা জল,
বিপদসীমার ঠিক নীচে বয়ে চলা
নর্দমা-- হোক
না তাও
তো আমার
শহর।
ব্রিজ টপকালেই যেন বাতাসে বাবার সিগারেটের গন্ধ,
নাগরিক
শোরগোলে কেমন যেন মিশে আছে মায়ের বকুনি (কম খেয়েছি?)! ভেজা
ভেজা পথঘাট
না ঠাকুমার
সদ্য ধোওয়া
উঠোন! মাপ
করবেন কুকুরের
‘ গু’ টাকে মহিমান্বিত করার
মত কিছু
মাথায় আসছে
না। তবে একথা স্বীকার করতেই
হবে আমাদের
মহল্লার ছেলে
মেয়র হবার
পর কিন্তু
অবস্থা অনেকটাই
ভাল। কুকুরগুলো
বেয়াড়া বেআদপ
বদতমিজ হলে
বেচারা সাফাই
কর্মীদের কি
দোষ? প্রাত:কালে প্রাতকৃত্য
তাও বুঝি,
সারাদিনে কত
বার যাবিরে
বাপ? রোজই
কি তোদের
পেট ছাড়ে?
খাস তো
ভাই ডাল, ভাত, বাসি
রুটি আর
উচ্ছিষ্ট শাক
চচ্চড়ি। বড়জোর
মাছের কাঁটা
আর রবিবার
হলে মাংসের
হাড়। তাতেই
অ্যাসিডিটি। যখনই বেরোবেন
দেখতে পাবেন
একাধিক
কুত্তা ঘাস চিবোচ্ছে। ওরা
ও বাংলী
মশাই । শুধু ভোরবেলা অর্ধ-
চেনা লোক
দেখলে মনে
পড়ে যায়
কোন এককালে
ওরাও শ্বাপদ
ছিল।
কুকুর
পুরাণ থাকুক।
ফিরে আসি আমার শহরে।
বিরাট যৌথ পরিবার শরিকী বিবাদে
ছিন্নভিন্ন, নিত্য অশান্তি, মনকষাকষি, বাবা
মায়ের কর্ম
ক্ষেত্রের লাগাতার টেনশন, ঝড়ের মত
কেটে যাওয়া
স্কুল জীবন,
কত শত
নষ্ট বসন্ত
। সাদা জামা লাল বেল্ট
ছেড়ে শাড়ি। স্কুল
ছেড়ে কলেজ।
প্রিয় বন্ধুর সাথে বিচ্ছেদ । ঠাকুমা
দিদিমার হঠাৎ করে হারিয়ে যাওয়া। বেকারত্বের
স্বাদ চাখা
। মেরুদণ্ড
ভেঙে পড়তে
পড়তেও থমকান
। বাবা বলত, “ যে
সহে, সে
রহে”। মূল কথাটা যিনি
বলেছিলেন তিনিও
কিন্তু চাটুজ্জে
ছিলেন।
চিরকাল অলস
সংগ্রাম বিমুখ
চুড়ান্ত
অমিশুক ঘরকুনো অনি কেমন যেন
বদলে গেল।
লড় নয়তো মর।
জীবনের সোজা হিসাব ।
হঠাৎ করে পাওয়া শ্রমিকত্ব
জীবনের ভোলটাই
পালটে দিল।
আচমকা পরিচিত অরকূট আর
স্থানীয় দোকান
থেকে রিটায়ার্ড
বাবার কষ্ট
সঞ্চিত অর্থে কিনে দেওয়া রিলায়েন্স
সিডিএমএ মোবাইল
সুদ সমেত
ফিরিয়ে দিতে
লাগল একটা
একটা করে
হারানো
বন্ধু । ছিন্ন বিছিন্ন যৌথ
পরিবার স্বতন্ত্রতা
বজায় রেখেও
কি করে
জানি না
মান অভিমান
ভূলে একদিন
মিলেমিশে গেল।
এই শহরেই প্রথম দেখা তার
সাথে। প্রথম
আলাপে যে
নাক উচু
করে বলেছিল,“
আপনাদের তো
ডিপার্টমেন্টে পোস্টিং নেই?”।
সে ও আদতে এই শহরেরই
জাতক। এই শহরই তো
শিখিয়েছে কিছুই
হারায় না।
No comments:
Post a Comment