প্রচণ্ড ব্যস্ত,সকাল বেলায় ডিএম সাহেবের ওখানে মিটিং করে এলাম, বিকালে যেতে হবে চন্দননগর। ডিএলসি সাহেবের মিটিং।মাঝে নটা গ্রাজুইটি কেসের হিয়ারিং। দুঁদে উকিল বাবুর মনে হয়েছিল গোলুমলু নতুন ম্যাডাম এসেছেন ধমক ধামক দিয়ে কাজ উদ্ধার করবেন, কিন্তু ম্যাডাম ও যে ধমকাতে পারেন এবং ওণার চেয়েও জোরে এটা বোধহয় ভাবেননি। প্রবল মাথা গরম করে উকিল বাবু বিদায় হলেন। মন বলল ধুৎ তেরি। অনেক হয়েছে, অফিসের পাশের সুইমিং পুলে ঝাঁপ মারি--- কিন্তু যা শ্যাওলা, বেঁচে থাকলে দাদ, হাজা, চুলকানি অবধারিত। তার ওপর সাঁতারটাও জানি কি না।
তিতকুটে মুখে বসে আছি, আবার মুঠোফোনের চিৎকার। ধুত্তোর বলে ধরতে গিয়ে মনটা হঠাৎ খুশি হয়ে গেল--- চৈতালী। পর মুহূর্তে বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল, অফিস টাইমে তো কোনদিন ফোন করে না। তবে? কি হল রে বাবা?
ভয়ে ভয়ে ধরতেই ওপাশে চৈতালীর কেজো সুর,“শোন না, তোর সীমাকে মনে আছে? আমাদের সাথেই পড়ত?” দিব্যি মনে আছে। যোগাযোগ নেই যদিও। ওরা এককালে বিশাল ধনী ছিল, ওদের বাড়িটা ছিল প্রাসাদতুল্য, সামনে একটা কালো গাড়ি রাখা থাকত। আর ছিল একটা জাঁদরেল কুকুর। তার নাম ল্যান্ডো। সীমা অর্থাৎ সীমন্তিকার বাবা মা খুব অল্প বয়সে মারা যান। ওর ঠাকুমাই ওকে মানুষ করেছিল। ঠাকুমা ছিলেন অপরূপ রূপসী। ধপধপে সাদা শাড়ি পরতেন, গায়ের রঙ ছিল মাখন। যাই হোক বললাম,“ হ্যাঁ। মনে আছে তো। কেন?” চৈতালী বলল, “জানিস তো সীমার ঠাকুমা যেন বীরভূমের কোথাকার একটা রাজকুমারী ছিলেন”। এটাও জানি। চৈতালী বলেই চলেছে,“ ঠাকুমার ঐ বাপের বাড়ি মানে রাজবাড়িটা ওরা বিক্রি করে দিচ্ছে। ” মনে মনে ভাবলাম,“তো? তুই কিনবি নাকি? না আমায় কিনতে হবে?” মুখে বললাম,“ ঠিক কি বলতে চাস, পরিষ্কার করে বল না বাপু। ”
“শোন না ঐ বাড়িটায় নাকি ইয়ে আছে। পরপর দুটি লোক ওখানে মারা গেছে সাম্প্রতিক কালে। দুটোই অস্বাভাবিক মৃত্যু । একজন মারা গেছেন সিঁড়ি থেকে গড়িয়ে পড়ে। তার নাকি ঘাড়টা উল্টোদিকে ঘুরে গিয়েছিল। আর একজন গলায় দড়ি দেন। ”
“সেকি রে?”
“হুঁ। আরো আছে মামা। এই দুজনেই ছিল এক নামি হোটেল চেইনের কর্মচারী। ওরা গিয়েছিল ঐ বাড়িটা দেখতে। ওরা ঠিক রিপোর্ট দিলে বাড়িটা সীমাদের থেকে ঐ হোটেল কোম্পানী কিনে নিত। ”
“বাপস্। তা দুজন কি একই সঙ্গে----?”
“না বে। সেটাই তো রহস্য। প্রথমজন মারা যাবার বেশ কয়েক মাস পর দ্বিতীয় ব্যক্তি যায় এবং সে ও---”
একটু দম নিয়ে চৈতালী আবার বলল,“যাবি নাকি? আমরা তো বসন্তপূর্ণিমা আর বেনারস ঘুরে এসেছি--। ” হ্যাঁ। এর আগে আমরা দুবার ভূতের বাড়িতে রাত কাটিয়েছি বটে, তবে কোনটাই তেমন খুনী টাইপ ছিল না। ইতঃস্তত করছি, চৈতালী বিরক্ত হয়ে বলল,“বল না বে? তুই বললে আমি অন্তুর (অন্তরা) সাথে কথা বলব, আর তুই সঞ্চির(সঞ্চিতা) সাথে কথা বল। সীমাও যাবে। সরেজমিন তদন্ত করতে। ওর ধারণা এটা ভূত টুত না। কোন দুষ্টু লোকের কারসাজি। ”
“প্রাণটা এতক্ষণ বোধহয় এর জন্যই হাঁকপাঁক করছিল রে,চল যাই। তবে এখুনি পারব না বস্। আমার মেয়ে আর অন্তুর ছেলের পরীক্ষা । তার ওপর আমি ডিডিও। মার্চ মাসের মধ্যে সরকারের সব টাকা না খরচা করতে পারলে গর্দান যাবে--- এপ্রিলে চল। ”
“চল্। ডান” বলল চৈতালী। এবার সঞ্চিকে ফোন করার পালা,“ও সঞ্চিতা যাবি তো?”
https://amianindita.blogspot.in
What ever I like...what ever I feel.... form movies to books... to music... to food...everything from my point of view.
Wednesday, 22 February 2017
একূট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment